News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:৫৫, ১ আগস্ট ২০১৫
আপডেট: ০৭:৩২, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

চেয়ার দখল, ধাক্কাধাক্কিতে চলে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

চেয়ার দখল, ধাক্কাধাক্কিতে চলে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা: বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে দিন দিন বিশৃঙ্খলা বেড়েই চলেছে। সংবাদ সম্মেলনে চেয়ার দখল, ধাক্কাধাক্কি, টেলিভিশনের পর্দায় নিজের ছবি দেখানোর প্রতিযোগিতা নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বারবার উদ্যোগ নিয়েও সমস্যার সমাধান করতে পারছেন না। নেতাকর্মীদের ঠেলাঠেলিকে কেন্দ্র করে দলটির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যম কর্মীদেরও প্রতিনিয়ত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। দলের নিম্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীদের এহেন আচরনের জন্য অনেক সময় সিনিয়র নেতারা যেমন বসার জায়গা পান না, তেমনি সংবাদ সম্মেলনের খবর সংগ্রহের জন্য আসা সংবাদকর্মীরাও অনেক সময় দাড়ানোর জায়গাও পান না। বিষয়টি নিয়ে সংবাদকর্মীরা নিয়মিত অভিযোগ করলেও দীর্ঘদিনেও এ সমস্যার কোনো সমাধান করতে পারেননি দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই বিএনপির সঙ্গে গণমাধ্যম কর্মীদের বাদানুবাদের ঘটনাও ঘটে।

বরাবরের মতো শনিবার দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করে বিএনপি। গণমাধ্যম কর্মীদের জানানো হয় এতে রাজনীতির প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে দলীয় অবস্থান তুলে ধরবেন দলটির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন।

গণমাধ্যম কর্মীরা এ সংবাদ সম্মেলন কভার করার জন্য যথাসময়ে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে উপস্থিত হন। দলের মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন ১১টা ৫০ মিনিটে কার্যালয়ের ব্রিফিং কক্ষে প্রবেশ করে গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “ব্রিফিং শুরু হতে কিছুটা সময় লাগবে। সেজন্য আমি আপনাদের কাছে কমপক্ষে ২৫ মিনিট সময় চেয়ে নিচ্ছি। কারণ আজকের ব্রিফিংয়ের বিষয়বস্তু আমাকে লিখতে হবে।”

এর ৩৫ মিনিট পর বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি ব্রিফিং কক্ষে প্রবেশ করেন। আগে থেকেই চেয়ারে বসা কয়েকজন সংবাদকর্মীদের উদ্দ্যেশে তিনি বলেন, “আজকে আমাদের অনেক নেতা, তাদেরকে জায়গা দিতে হবে। আপনাদের সামনের টেবিলগুলো সরিয়ে জায়গা করতে হবে।” তিনি কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীকে চেয়ার ছেড়ে দাঁড়াতে বলেন। এসময় সংবাদকর্মীরা তাকে বলেন, “আগে কেনো বসার জায়গা আপনারা ঠিক করেননি। এখন এতো দেরিতে ব্রিফিং শুরু হচ্ছে। আপনারা দ্রুত ব্রিফিং শুরু করুন। আমরা সরতে পারব না।”

সংবাদকর্মীদের আপত্তি সত্ত্বেও তিনি টেবিল স্থানান্তরের উদ্যোগ নেন। এসময় সংবাদকর্মীরা এর বিরোধীতা করলে বাদানুবাদের সৃস্টি হয়। এক পর্যায়ে সংবাদকর্মীরা সংবাদ সম্মেলন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যেই চলতে থাকে বাদানুবাদ।

টেলিভিশনের কিছু রিপোর্টার ব্রিফিং কক্ষের পাশে অন্য একটি কক্ষে গিয়ে নিজেদের মধ্যে রুদ্ধদ্বার আলোচনা করেন। এ সময় বিএনপির নেতারা তাদের অনুরোধ ও তোষামোদ করে ব্রিফিং কক্ষে ফিরিয়ে আনেন।  

এর প্রায় দেড় ঘন্টা পর বিএনপির সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলন শুরু করার আগে বিএনপির মুখপাত্র উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দাঁড়িয়ে প্রায় ১০ মিনিট বক্তব্য দেন।
 
পরে রিপন সংবাদ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “প্রায় সময়ই ব্রিফিংয়ে যাদের প্রয়োজন নেই, সেই সব নেতাকর্মীরা এসে বসে থাকেন। আমরা অনেককে হয়তো উঠে যেতেও বলি। ওনারা দুঃখ পান। অনেকে আবার কটূক্তি করে বলেন, নেতারা আন্দোলনের মাঠে থাকে না, তারাই ব্রিফিংয়ে চেয়ারে বসে। আমরা মাঠে থাকি, আমরাও বসব।”
 
বিএনপির মুখপাত্র রিপন বলেন, “দলের নেতাকর্মীদের মনে রাখতে হবে, ব্রিফিংয়ে শুধু বসতে পারবে দলের সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে ন্যুনতম নির্বাহী কমিটির সদস্যগণ। এটা আমাদের অঙ্গ সংগঠনের ব্রিফিং নয়। অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নন, এমন যারা এখানে বসে থাকেন বা ক্যামেরায় চেহারা দেখাতে পাশে দাড়িয়ে থাকেন; তাদের বিষয়টি উপলব্ধি করতে হবে। মনে রাখতে হবে, হাই কমান্ডের নির্দেশেই আমি এসব বলছি। তাছাড়া, সংবাদ সম্মেলনে দলের বক্তব্য প্রচার করাও আন্দোলনের অংশ। এটাও রাজনীতির অংশ। তাই নিজেদের সন্মান রক্ষা করে বিষয়গুলো খেয়ালে রাখলে সবার জন্যই মঙ্গলজনক হবে।”

নিউজবাংলাদেশ/আরআর/এএইচকে

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়