News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:২২, ৩ নভেম্বর ২০২৫

ঢাকায় তুর্কি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

ঢাকায় তুর্কি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

ছবি: সংগৃহীত

তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং মানবিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার লক্ষ্যে ঢাকায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন তুরস্ক–বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তুরস্কের সংসদ সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদল।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাষ্ট্র অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিদ্যমান গতিশীলতা আরও সুসংহত করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।

সাক্ষাৎ শেষে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈঠকে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ, মানবিক কার্যক্রম এবং শিক্ষা ও উন্নয়ন খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

বৈঠকে মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন বিদ্যমান। দুই দেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে, যা ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি আরও জানান, প্রতিনিধিদল গত রবিবার (২ নভেম্বর) কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে। সেখানে তারা তুর্কি সংস্থা ও বেসরকারি সংগঠনগুলোর মানবিক কার্যক্রম—বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের সেবামূলক কার্যক্রম—পর্যবেক্ষণ করেছেন।

আরও পড়ুন: বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০০ মুসলিমের তালিকায় ড. ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস তুরস্কের অব্যাহত মানবিক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থন আমাদের মানবতার প্রতি তাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট আমাদের সময়ের অন্যতম মর্মান্তিক মানবিক বিপর্যয়। কেবল ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে তারা নিপীড়নের শিকার হয়েছে এবং নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আট বছর ধরে শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সীমিত হয়ে পড়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদে হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্ব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের নিপীড়ন ও অন্যায়কে ভুলে যেতে পারে না।

অধ্যাপক ইউনুস তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ রপ্তানিমুখী উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে উন্নত দেশগুলোর বাজারে প্রবেশের বিশাল সম্ভাবনা ধারণ করে। আমরা চাই তুর্কি বিনিয়োগকারীরা এই সুযোগ কাজে লাগান।

তিনি জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তুরস্কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আরও গভীর করার লক্ষ্যে কাজ করছেন।

বৈঠকে অধ্যাপক ইউনুস তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও ফার্স্ট লেডির প্রতি বাংলাদেশের প্রতি তাদের ধারাবাহিক সমর্থন ও সংহতির জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন—বিশেষ করে মানবিক ও উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

আলোচনার শেষ পর্যায়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ আমাদের দুই দেশের জনগণ ও অভিন্ন ভবিষ্যতের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে তুরস্কের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।

রাষ্ট্র অতিথি ভবনের উষ্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই সাক্ষাৎকারে উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে সংসদীয় বিনিময়, অর্থনৈতিক সংলাপ এবং মানবিক উদ্যোগের পরিধি আরও সম্প্রসারণে একমত হন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়