ডিজিটাল শাটডাউনের শঙ্কা আইএসপি ব্যবসায়ীদের
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবার খরচ বাড়ানোর আশঙ্কায় খসড়া গাইডলাইন সংশোধনের দাবিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)-এর সদস্যরা।
সোমবার (০৩ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে সারা দেশ থেকে দেড় হাজারেরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবসায়ী অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
আইএসপিএবি নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, প্রস্তাবিত খসড়া গাইডলাইনে ভ্যাট ও ট্যাক্স বৃদ্ধির প্রস্তাব রয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে ইন্টারনেটের দাম কয়েকগুণ বেড়ে যাবে এবং এর বোঝা পড়বে সাধারণ গ্রাহকের ওপর।
এর আগে সকালে রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবির সভাপতি মো. আমিনুল হাকিম বলেন, নতুন টেলিকম পলিসি বাস্তবায়নের ফলে গ্রাহক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার খরচ ২০ শতাংশ বাড়বে। অর্থাৎ ৫০০ টাকার সংযোগে খরচ বাড়বে ১০০ টাকা এবং এক হাজার টাকার সংযোগে বাড়বে ২০০ টাকা। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ডিজিটালি শাটডাউন হয়ে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, নতুন খসড়া গাইডলাইনে রেভিনিউ শেয়ারিং ও উচ্চ লাইসেন্স ফি আরোপের ফলে ব্রডব্যান্ড প্যাকেজের দাম সরাসরি বেড়ে যাবে। এটি শুধু গ্রাহকদের ক্ষতি করবে না, বরং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আইএসপিএবি সভাপতি বলেন, আমাদের দাবি, গাইডলাইন সংস্কার করে সেবার খরচ কমানো হোক, যাতে ইন্টারনেট সেবা সাশ্রয়ী ও সবার জন্য সহজলভ্য থাকে। ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণে আমরা জনগণের এবং ব্যবহারকারীদের পাশে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই তারা যেন এই টেলিকম পলিসির বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন এবং জনগণের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনেন।
আরও পড়ুন: স্টারলিংককে অধিক সুবিধা দেওয়ার কারণ জানতে চায় আইএসপিএবি
আইএসপিএবি এদিন সাত দফা দাবি ও প্রস্তাবনা উত্থাপন করে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
১. সিএমএসপি (সেলুলার মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডার) গাইডলাইন থেকে ফিক্সড ওয়্যারলেস অ্যাকসেস (এফডব্লিউএ) যেমন জিপিফাই, রবি-ওয়াইফাই, বাংলালিংক ওয়াইফাই-এর অনুমতি বাতিল। নীতিমালা অনুযায়ী এই ফিচারগুলো শুধুমাত্র এফটিএস-এর আওতায় থাকা উচিত।
২. সিএমএসপি গাইডলাইন থেকে হোম/অফিস/ইনডোর প্রাঙ্গণে ফাইবার কানেক্টিভিটি ডেপ্লয় করার অনুমতি বাতিল।
৩. ওয়াইফাই/আইএসএম ব্যান্ডের বাণিজ্যিক ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ।
৪. অবকাঠামো শেয়ারিং সংক্রান্ত গাইডলাইন স্পষ্ট করার দাবি।
৫. এফটিএসপি রেভিনিউ শেয়ারিং ৫.৫% এবং সোশ্যাল অবলিগেশন ফান্ড (এসওএফ) ১% বাতিল বা পুনর্বিবেচনা।
৬. আইপিটিএসপি এসএমএস সার্ভিস ও মোবাইল ডায়ালার বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান।
৭. এফটিএসপি ও জেলা এফটিএসপি লাইসেন্সধারীদের মধ্যে বৈষম্য দূর করার দাবি।
আইএসপিএবি নেতৃবৃন্দের মতে, এই সাত দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে দেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে এবং সাধারণ মানুষের জন্য ইন্টারনেট সেবা হয়ে উঠবে ব্যয়বহুল ও দুর্বোধ্য।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








