News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:৫৭, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

‘পুলিশের মূল দায়িত্ব নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা’

‘পুলিশের মূল দায়িত্ব নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা’

ছবি: সংগৃহীত

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

তিনি বলেছেন, এ দেশের আপামর জনগণ, রাজনৈতিক দলসহ সর্বমহলের প্রত্যাশা পূরণের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব পুলিশের কাঁধে। সবার প্রত্যাশা—বাংলাদেশ পুলিশ সামনের জাতীয় নির্বাচনে এমন এক মানদণ্ড স্থাপন করবে, যা শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশংসিত হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশসহ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মালিবাগে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ‘হল অব প্রাইড’ সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ আয়োজিত বিশেষ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, বিপিএম। সিসকো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পুলিশের বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জেলার পুলিশ সুপাররা সভায় অংশ নেন। এ সময় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইনের প্রয়োগ শুধু শক্তি দিয়ে নয়, ন্যায়, নিষ্ঠা ও মানবিকতা দিয়েও প্রতিষ্ঠিত হয়।

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচনী মাঠে আপনারা কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নন; আপনারা জনগণের নিরাপত্তা, আস্থা ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার প্রতীক।

তিনি আরও বলেন, সামনে নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা ও সংলাপ শুরু হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে পুলিশ সদস্যদের কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষাবলম্বন, বিশেষ সুবিধা প্রদান বা গ্রহণ, কিংবা নিজেকে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে ভাবা যাবে না।

আরও পড়ুন: এক এনআইডিতে সর্বোচ্চ ১০টি সিম থাকতে পারবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ফ্যাসিস্টদের তালিকা পুলিশের কাছে রয়েছে। তারা সমাজ ও রাষ্ট্রে অস্থিরতা সৃষ্টিতে সরাসরি জড়িত। তাছাড়া অনেক অপরাধী জামিনে ছাড়া পেয়ে পুনরায় অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে।

তিনি নির্দেশ দেন, ফ্যাসিস্টদের অপকর্ম, অপপ্রচার, অপরাজনীতি, অপরাধ ও ঝটিকা মিছিল ঠেকাতে গ্রেফতার কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। তবে নিরীহ মানুষকে যেন হয়রানি করা না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।

ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অধীনস্থ পুলিশ অফিসার ও ট্রুপসদের পেশাদারিত্ব, টিম স্পিরিট, শৃঙ্খলা ও মনোবল বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। অধীনস্থদের মধ্যে যাদের পেশাদারিত্ব নেই, শৃঙ্খলা মানে না, কমান্ড অমান্য করে, কিংবা সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করে—তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি নির্দেশনা দেন, জেলা পর্যায়ে ঘনঘন কোর কমিটির সভা আহ্বান করতে হবে। রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার এবং মিথ্যা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চকে আরও সক্রিয় করতে হবে। জেলার সকল বিষয়ে নখদর্পণে থাকতে হবে। থানা থেকে লুট হওয়া, হারানো বা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান ত্বরান্বিত করতে হবে।

তিনি যোগ করেন, জেলার কেপিআইগুলোর নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে হবে। অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে—এ বিষয়ে পুলিশসহ সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।

উপদেষ্টা দৃঢ়ভাবে বলেন, পুলিশের ওপর আক্রমণ কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না। এ ধরনের ঘটনায় দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সাইবার অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে। এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে তরুণ পুলিশ অফিসারদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশের বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এবং জেলার পুলিশ সুপারদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়