News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৪১, ২০ আগস্ট ২০২৫

নসরুল হামিদের অবৈধ বাংলো উচ্ছেদ করলো বিআরটিএ

নসরুল হামিদের অবৈধ বাংলো উচ্ছেদ করলো বিআরটিএ

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দুই দিনের অভিযান শুরু করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। 

বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে শুরু হওয়া এই অভিযানের প্রথম দিনেই সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর একটি বাগানবাড়ি (বাংলো) গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ অভিযানে প্রায় দেড় একর সরকারি জমি উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিন সকাল থেকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাউটাইল মৌজার কোন্ডা ইউনিয়নের কাউটাইল এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। 

অভিযানে বিআইডব্লিউটিএ, ঢাকা জেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই মোবাইল কোর্টে নসরুল হামিদ বিপুর বাগানবাড়ির তিনটি দোতলা ভবন এবং একটি ডকইয়ার্ডের প্রায় ২০০ ফুট সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়।

বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকার ঢাকার চারপাশের নদী—বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদের সীমানা নির্ধারণ করে ৮০ কিলোমিটার এলাকায় পিলার স্থাপন করেছে। এসব নদীকে দখলমুক্ত রাখতে ২০০৯ সাল থেকে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। 

আরও পড়ুন: জুলাই মাসে ৪২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ৩৮০ জনের

তিনি আরও জানান, গত বছরের ৫ আগস্টের পর নানা প্রতিকূলতার কারণে অভিযান বন্ধ ছিল। তবে এবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এটি আবার শুরু হয়েছে এবং বুড়িগঙ্গার স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে এটি পরিচালিত হচ্ছে। যত প্রভাবশালী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানই হোক না কেন, নদীর জায়গা দখল করে কেউ ব্যক্তিগতভাবে ভোগ করতে পারবে না।

এই উচ্ছেদ কার্যক্রম হাইকোর্টের রিট পিটিশনের আদেশের বাস্তবায়ন। এর মূল উদ্দেশ্য হলো নদীর জমি রক্ষা এবং পরিবেশ সুরক্ষা। 

অভিযানে বিআইডব্লিউটিএ ও স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ, র‍্যাব, ফায়ার সার্ভিস, আনসার এবং ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪-এর কর্মীরাও সহায়তা দেন। যেকোনো ধরনের বাধা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছিল।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এটি সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রথম অভিযান। ভবিষ্যতে আরও অভিযান পরিচালনা করা হবে।

বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ অভিযান ২০ ও ২১ আগস্ট—এই দুই দিন ধরে চলবে। প্রথম দিনের অভিযানে প্রায় দেড় একর জমি উদ্ধার করা হলেও উচ্ছেদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। 

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) কাউটাইল ও দোলেশ্বর এলাকায় নদীতীরের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা রয়েছে। শুধু বুড়িগঙ্গা নয়, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ এবং বালু নদীতেও অবৈধ দখলমুক্ত করার প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।

এই অভিযান একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে যে রাজনৈতিক ক্ষমতার ছত্রছায়ায় নদীর সম্পদ দখল করা হলেও প্রশাসন কোনো ছাড় দেবে না। এটি আইনের শাসনের প্রতি সরকারের অঙ্গীকারের প্রতিফলন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়