অবাধ নির্বাচনে প্রস্তুত সেনাবাহিনী: শৃঙ্খলা ও নৈতিকতায় জোর
ফাইল ছবি
দেশের আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে সেনাবাহিনীকে সব ধরনের সহযোগিতার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ অনুষ্ঠানে সেনা সদস্যদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
সেনাপ্রধান বলেন, দেশ এখন নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য সেনাবাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
তিনি আরও জানান যে, সেনারা দীর্ঘ সময় ধরে মাঠে দায়িত্ব পালন করছেন, যা আগে কখনো এত দীর্ঘ সময় ধরে করতে হয়নি। এই পরিস্থিতিতে তিনি সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার এবং দূরত্ব থাকলে তা দূর করার ওপর জোর দেন।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, দেশের মানুষ এখন সেনাসদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে। তোমরাই দেশের ভবিষ্যৎ।
তিনি সকল সেনা সদস্যকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে এবং বাহিনীর চেইন অব কমান্ড অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান।
সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে নানা কটূক্তির বিষয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, এসব মন্তব্যে অখুশি হওয়ার কিছু নেই। যারা এসব করছে, তাদের বয়স কম। তারা আমাদের সন্তানের বয়সী। তারা বড় হলে নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে এবং নিজেরাই লজ্জিত হবে।
আরও পড়ুন: ‘বিগ ব্রাদার’ বাস্তবতা: আজও ঝুঁকিতে নাগরিক গোপনীয়তা
তিনি সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, সেনাবাহিনী একটি পেশাদার সংগঠন। মাঠে দায়িত্ব পালনের সময় পেশাদারি দেখাতে হবে। কোনো ধরনের প্রতিশোধমূলক কাজে জড়ানো যাবে না।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা নৈতিক স্খলনে জড়িত কোনো সদস্যকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি নাম উল্লেখ না করে বলেন, একজন সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ তদন্তাধীন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারবে না।
একইভাবে, আরেকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়েও তদন্ত চলছে বলে জানান সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, নৈতিক স্খলনের বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন যে, ‘মিডিয়া ট্রায়াল’-এর ভিত্তিতে কাউকে সাজা দেওয়া হবে না, বরং অভিযোগ প্রমাণিত হলেই কেবল ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, একজন সেনা কর্মকর্তাকে গড়ে তুলতে রাষ্ট্র বিপুল অর্থ ব্যয় করে। তাই কেউ যাতে অপরাধে জড়াতে না পারে, সে বিষয়ে আগেভাগেই খেয়াল রাখতে হবে। অপরাধে জড়িয়ে পড়ার পর তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়াকে রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
এই অনুষ্ঠানে ঢাকা সেনানিবাসের পদস্থ কর্মকর্তারা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন এবং সব সেনা স্থাপনার কর্মকর্তারা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








