News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:৪৬, ১ আগস্ট ২০২৫

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মেজরের বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মেজরের বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার গুরুতর অভিযোগে দুটি পৃথক তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে ওই কর্মকর্তাকে গত ১৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে আটক করে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়। 

প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও ৩১ জুলাই বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের বরাত দিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত কর্মকর্তা হলেন মেজর সাদিক। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কর্মীদের গোপনে রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, সম্প্রতি একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয় এবং ১৭ জুলাই তাকে উত্তরার নিজ বাসস্থান থেকে আটক করা হয়।

ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের লক্ষ্যে প্রথমত একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে, যেখানে প্রাথমিক তদন্তেই অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হয়েছে। 

দ্বিতীয়ত, অভিযুক্ত কর্মকর্তার কর্মস্থল থেকে অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত থাকার বিষয়েও আরেকটি পৃথক তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে।

আইএসপিআর আরও জানায়, তদন্ত শেষে আদালতের সুপারিশ অনুযায়ী সেনা আইন ও বিধির আলোকে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ও করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: আ. লীগের গোপন বৈঠক: গ্রেফতার ২২, সেনা হেফাজতে ১ মেজর

ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে ৩১ জুলাই আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস পরিদফতরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, মেজর সাদিক নামে একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ মেলায় তাকে সেনা হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনী পেশাগত শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। কোনো কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডে এ নীতিমালা লঙ্ঘিত হলে তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয় এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আইএসপিআর একাধিক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, শৃঙ্খলাপরায়ণ এবং পেশাদার প্রতিষ্ঠান। রাজনৈতিক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কোনো সুযোগ নেই।

তদন্ত আদালত পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধানের পর প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা করে মেজর সাদিকের বিরুদ্ধে সেনা আইন ও আচরণ বিধির আওতায় যথোপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে সেনা সদর। 

অপরদিকে, কর্মস্থলে অনুপস্থিতির অভিযোগে গঠিত পৃথক তদন্ত আদালত থেকে আসা সুপারিশের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডারের বিরুদ্ধে ‘কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজনৈতিক অঙ্গনে সেনা সদস্যদের সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতা নিয়ে গোপন পর্যবেক্ষণ বাড়িয়েছে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী। 

মেজর সাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগটি এমন এক সময়ে এলো, যখন সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক ও পেশাদার নিরপেক্ষতা রক্ষা নিয়ে জনমনে নানা আলোচনা চলছিল। ফলে এই পদক্ষেপকে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার অংশ হিসেবে বিশ্লেষণ করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়