শিক্ষা সচিব সিদ্দিক জোবায়েরকে প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন

ফাইল ছবি
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে হতাহতের ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে শোকাবহ শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কিত ঘটনা হিসেবে সামনে এসেছে। একই সঙ্গে এই দুর্ঘটনার প্রভাব শিক্ষাবিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ভূমিকাতেও প্রভাব ফেলেছে।
সরকারি সূত্র জানায়, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব (চুক্তিভিত্তিক) সিদ্দিক জোবায়েরকে অবশেষে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এই প্রত্যাহার কার্যক্রমটি আসতে কিছুদিন সময় লেগেছিল। কারণ, মাইলস্টোন বিমান দুর্ঘটনার পরপরই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ শুরু করেন, বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের পদত্যাগ দাবি করে। তারা সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভে উত্তেজিত হয়ে, কিছু পর্যায়ে সচিবালয়ের ভিতর প্রবেশ এবং গাড়ি ভাঙচুরসহ সহিংসতার ঘটনাও ঘটে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ ৮ জন আশঙ্কাজনক, ১৩ গুরুতর
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম ২১ জুলাই রাত ৩টার দিকে ফেসবুকে জানান, মাইলস্টোন দুর্ঘটনার কারণে পরবর্তী দিনের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ জনগণ ও শিক্ষাব্যবস্থার সংশ্লিষ্টরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সরকারি সূত্র অনুসারে, সিদ্দিক জোবায়ের গত বছরের ২৪ অক্টোবর দুই বছরের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তবে শিক্ষার্থীদের চাপ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা এবং প্রগতিশীল শিক্ষাব্যবস্থার জন্য উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় অবশেষে তাকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হলো।
দেশের অন্যান্য সংবাদমাধ্যম জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনার তদন্তে নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করবে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
এছাড়াও শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারকেও পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।
সরকারের এই পদক্ষেপ শিক্ষাব্যবস্থার পুনর্গঠনের লক্ষ্যে একটি সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে সামাজিক ও শিক্ষাব্যবস্থার স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সময় সাপেক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি