করোনা প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন নির্দেশনা জারি

ফাইল ছবি
প্রতিবেশী ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন উপধরনের দ্রুত বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। সম্প্রতি ভারতের কেরালা, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ এবং নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটানের কিছু এলাকায় XBB.2.9 ও KP.3 নামের নতুন স্ট্রেইনের প্রকোপ বেড়েছে। ফলে বাংলাদেশেও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে—এমন আশঙ্কায় সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
বিশেষ করে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) পাঁচ দফা নির্দেশনা জারি করেছে।
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানা নিশ্চিত করতে পাঁচ দফা নির্দেশনা জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
সোমবার (৯ জুন) রাতে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান তার ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, করোনার নতুন উপধরনের সংক্রমণ রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রস্তুতি নিতে হবে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুপারিশের ভিত্তিতে মাউশি যেসব স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে জোর দিয়েছে, তা হলো:
- হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা: প্রতিটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীকে নিয়মিতভাবে সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার অনুশীলন করতে হবে।
- মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন বা জনসমাগমস্থলে সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
- শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা: করোনা উপসর্গবিশিষ্ট ব্যক্তিদের থেকে অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে।
- মুখমণ্ডল স্পর্শ না করার পরামর্শ: অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ থেকে বিরত থাকতে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা হচ্ছে।
- সঠিকভাবে হাঁচি-কাশি ঢেকে রাখা: হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু কিংবা কনুই দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভয়ংকর রূপে ফিরেছে করোনা, ভারত ভ্রমণে বিশেষ সতর্কতা
এছাড়াও, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্দেশ দিয়েছে, দেশের আন্তর্জাতিক প্রবেশপথগুলোতে থার্মাল স্ক্যানার ও ডিজিটাল থার্মোমিটারের মাধ্যমে আগত যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
যদি কারও মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে তাকে অবিলম্বে ঘরে থাকতে এবং দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর হটলাইন নম্বর ০১৪০১-১৯৬২৯৩-এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
সরকারি এই সতর্কতা ও নির্দেশনা নতুন ধরনটির সংক্রমণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রতিবেশী দেশগুলোতে নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে নিয়মিত স্ক্রিনিং জোরদার করেছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এই নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করা হলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সমাজের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি