News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:৪৩, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আপডেট: ১৫:৫১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সবক্ষেত্রে আইয়্যামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠা করেছে আ. লীগ: প্রধান উপদেষ্টা

সবক্ষেত্রে আইয়্যামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠা করেছে আ. লীগ: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকার সবক্ষেত্রে আইয়্যামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠা করে গেছে বলে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যারা এমন অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার করা হবে।

রাজধানীতে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাবের হেডকোয়ার্টারে অবস্থিত আয়নাঘরসহ তিনটি স্থান পরিদর্শন শেষে সংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের টর্চার সেল কুখ্যাত আয়নাঘর পরিদর্শনে যান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি ঘুরে ঘুরে সেখানকার বীভৎস দৃশ্যগুলো দেখেন। 

তার সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন উপদেষ্টা, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি এবং আয়নাঘরে গুম হওয়া ভুক্তভোগীদের কয়েকজন।

তারা প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল এবং র‌্যাব-২ এর সিপিসি-৩ এর ভেতরের সেলগুলো পরিদর্শন করেন।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনারা সবাই সঙ্গে ছিলেন, কাজেই আমার আর নতুন করে কিছু বলতে হবে না। আপনারা সবই দেখেছেন। এক কথায় যদি এর বর্ণনা দিতে হয় তবে বলতে হয় এক বীভৎস দৃশ্য। মানুষের মনুষ্যত্ব বোধ বলে যেটা আছে সেটাকে বহু গভীরে নিয়ে গেছে নিশ্চিহ্ন করার জন্য। নৃশংস অবস্থা প্রতিটি জিনিস যে হয়েছে এখানে। যতটা শুনি অবিশ্বাস্য লাগে যে, এটা কি আমাদেরই দেশ, আমাদেরই জগৎ? 

আরও পড়ুন: আয়নাঘর পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ভুক্তভোগীদের বিনা কারণে, বিনা দোষে জঙ্গি আখ্যায়িত করে মানুষকে তুলে এনে এসব টর্চার সেলে নির্যাতন করা হতো। 

তিনি বলেন, এই রকম টর্চার সেল (নির্যাতনকেন্দ্র) সারা দেশে জুড়ে আছে। ধারণা ছিল এখানে কয়েকটা আছে। এখন শুনছি সারা দেশ জুড়েই আরও সাতশ-আটশ আয়নাঘর আছে। আমার ধারণা ছিল শুধু এখানেই আছে। এগুলার সংখ্যাও নিরূপণ করা যায়নি, কতটা জানা আছে, কতটা অজানা আছে।

গুম কমিশনকে এসব আয়নাঘর আবিষ্কারের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আইয়ামে জাহেলিয়াত বলে একটা কথা আছে না, গত সরকার এই আইয়্যামে জাহেলিয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে সর্বত্র।

গুম কমিশনের প্রতিবেদনে এই আয়নাঘরের ডকুমেন্টেশন বাধ্যতামূলক করা হবে বলে জানান অধ্যাপক ইউনূস। একইসাথে যারা এ ধরনের কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিল তাদের বিচার করা হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। এসব তথ্য-প্রমাণ সিলগালা করে রাখা হবে এবং বিচারের জন্য ব্যবহৃত হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আয়নাঘর পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়।

তার আগে ১৯ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন। সে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে গুমের ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হয়। তখন কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টাকে আয়নাঘর পরিদর্শনের আহ্বান জানান।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা জানান শিগগিরই তিনি আয়নাঘর পরিদর্শনে যাবেন।

এদিকে গত জুলাইয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়ার পর ডিজিএফআইয়ের যে টর্চারসেলে রাখা হয়েছিল। আজ সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে কক্ষটি তিনি চিনতে পেরেছেন। দেয়ালের উপরের অংশের খোপগুলোতে এক্সস্ট ফ্যান ছিল বলে জানান তিনি।

এছাড়া গত জুলাইয়ে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়ার পর ডিজিএফআইয়ের যে টর্চারসেলে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে রাখা হয়েছিল, আজ সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে কক্ষটি চিনতে পারেন তিনি। এই কক্ষের একপাশে টয়লেট হিসেবে একটি বেসিনের মতো ছিল বলে জানান তিনি। ৫ আগস্টের পর এই সেলগুলোর মাঝের দেয়াল ভেঙে ফেলা হয় এবং দেয়াল রং করা হয়।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়