যুক্তরাজ্যের রয়েল কলেজ অব ডিফেন্সে নিষিদ্ধ ইসরায়েলি সেনা

ছবি: ইন্টারনেট
গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার ও গণহত্যামূলক আগ্রাসনের কারণে আগামী বছর থেকে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী সামরিক অ্যাকাডেমি রয়েল কলেজ অব ডিফেন্স স্টাডিজ-এ ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) কোন সদস্য ভর্তি হতে পারবেন না।
গত রবিবার বিষয়টি স্থানীয় গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সরকার। টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এমনটি দাবি করা হয়েছে।
সম্প্রতি লিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির ঘোষণা দেওয়ার পর এই উদ্যোগ নিলো ডাউনিং স্ট্রিট।
দ্য টেলিগ্রাফকে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, 'যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা কর্মসূচির কোর্সগুলোয় বিভিন্ন দেশের মানুষ অংশ নিতে পারেন। সব সামরিক কোর্সের মূল সুর আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা। কিন্তু ইসরায়েল সরকার গাজায় সামরিক অভিযান আরও তীব্র করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা অন্যায়।'
তিনি বলেন, 'এই যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধের জন্য নিঃসন্দেহে একটি কূটনীতিক সমাধান আছে। তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি চালু, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা ও গাজার মানুষের কাছে ত্রাণ সরবরাহ আরও বাড়াতে হবে।'
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৫৩ ফিলিস্তিনি
১৯২৭ সালে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল রয়েল কলেজ অব ডিফেন্স স্টাডিজ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রায় ৯৮ বছর পর এবারই প্রথম ইসরায়েলি সেনারা নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মেজর জেনারেল (রিজার্ভ) আমির বারাম ও আইডিএফের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিনসহ আরও অনেক ইসরায়েলি সেনা এই অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
বারাম একে 'পক্ষপাতদুষ্ট' ও 'যুদ্ধের সময় মিত্রের বিশ্বাসভঙ্গের অসম্মানজনক কাজ' হিসেবে আখ্যা দেন।
তার ভাষ্য, 'যুক্তরাজ্যের সহনশীলতার গর্বের ইতিহাস আছে। সোজা ভাষায় বলতে গেলে, এটা সেই ঐতিহ্য ও ভদ্র আচরণ থেকে লজ্জাজনক বিচ্যুতি।'
তিনি দাবি করেন, ইসরায়েল আগ্রাসন চালাচ্ছে না। তার মতে, ইসরায়েলের সামরিক উদ্যোগের লক্ষ্য হুতিদের থেকে আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলকে সুরক্ষা দেওয়া। পাশাপাশি, একটি ইসলামপন্থি সরকার, যাদের দেশের মানুষ 'ইংল্যান্ড ধ্বংস হোক রব তোলে'—তারা যাতে পরমাণু অস্ত্রের নাগাল না পায়, তাও নিশ্চিত করছে ইসরায়েল।
পাশাপাশি, হামাসের হাত থেকে ৪৮ জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার জন্যেও ইসরায়েল যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেন ওই জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা।
গত জুলাইতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন কিয়ার স্টারমার। এতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান। তবে এখানেই থামেনি ডাউনিং স্ট্রিটের ইসরায়েলি গণহত্যাবিরোধী উদ্যোগ।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি