News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:২৬, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১০:৩০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

৮ বছরে শিক্ষিত তরুণদের বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ

৮ বছরে শিক্ষিত তরুণদের বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ

ফাইল ছবি

বাংলাদেশে শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪–এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রতি তিনজন বেকারের একজন স্নাতক ডিগ্রিধারী। বিশেষত দুই বছরের বেশি সময় ধরে বেকার থাকা তরুণদের মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারীরাই সংখ্যায় এগিয়ে রয়েছেন।

বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বর্তমানে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ২৪ হাজার। এর মধ্যে ৮ লাখ ৮৫ হাজারই স্নাতক ডিগ্রিধারী। অর্থাৎ, মোট বেকারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ উচ্চশিক্ষিত তরুণ।

উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েছে
২০১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুসারে, ওই বছর স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকারের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪ লাখ। আট বছরের ব্যবধানে এই সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯ লাখে। এই হিসেবে দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে এখন প্রতি তিনজন বেকারের মধ্যে একজন উচ্চশিক্ষিত। বিএ বা এমএ ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও তারা শোভন ও পছন্দমতো চাকরি পাচ্ছেন না।

বেকারের বয়স এবং শিক্ষাগত স্তর অনুযায়ী বিস্তার
১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে বেকারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই বয়সসীমার স্নাতক ডিগ্রিধারী তরুণদের মধ্যে ১৭ শতাংশের বেশি দুই বছরের বেশি সময় ধরে বেকার রয়েছেন। তুলনায়, উচ্চমাধ্যমিক পাস করে দুই বছরের বেশি সময় বেকার থাকা তরুণদের সংখ্যা ৮ শতাংশের বেশি, আর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই এমনদের মধ্যে মাত্র ১ শতাংশ।

আরও পড়ুন: অক্টোবরে সরকারি চাকরিজীবীদের টানা ৩ দিনের ছুটি

বেকারের সংজ্ঞা ও বাস্তবতা
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করে মজুরি পাওয়া ব্যক্তি বেকার হিসেবে ধরা হবে না। তবে, বাংলাদেশের বাস্তবতায় সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করেই জীবনধারণ সম্ভব নয়। এ কারণে দেশে প্রায় এক কোটি মানুষকে ‘ছদ্মবেকার’ হিসেবে ধরা হচ্ছে – যারা কাজের সুযোগ পেয়েও পর্যাপ্ত বা মনমতো কাজ পাচ্ছেন না।

মানসিক ও সামাজিক প্রভাব
দেশে বিপুলসংখ্যক শিক্ষিত তরুণ-তরুণী বেকার বসে আছেন। তারা চাকরি না পাওয়ায় বা পছন্দমতো চাকরি না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত বেকার যারা পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন, তাদের ওপর মানসিক চাপ ও সামাজিক টানাপোড়েন অনেক বেশি। দিন গোনা চলে একটি সম্মানজনক চাকরির প্রত্যাশায়।

চাকরির অভাবে রাজনৈতিক প্রভাব
গত বছর শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেওয়ার পর শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। মূলত চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে হতাশা থেকেই সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা এই আন্দোলন শুরু করেন।

অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরামর্শ
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের চলমান সংস্কার আলোচনায় রাজনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংস্কারের গুরুত্বও সমান। বিশেষ তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা প্রয়োজন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়