News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:৫০, ১৭ আগস্ট ২০২৫

ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিং দেবেন ড. খলিলুর রহমান

ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিং দেবেন ড. খলিলুর রহমান

ফাইল ছবি

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিতে নতুন করে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করেছে সরকার। 

এই ধারাবাহিকতায় রবিবার (১৭ আগস্ট) জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের নিয়ে একটি বিশেষ ব্রিফিং করবেন। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই ব্রিফিংয়ের মূল উদ্দেশ্য হলো রোহিঙ্গা ইস্যুতে আসন্ন চারটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিষয়ে বিদেশি মিশনপ্রধানদের অবহিত করা এবং বৈশ্বিক সমর্থন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।

ড. খলিলুর রহমান কূটনীতিকদের সামনে চলতি বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চারটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিস্তারিত তুলে ধরবেন। জাতিসংঘ, কাতার এবং বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনগুলো হলো:

  • অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা’: এটি আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হবে।
  • জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন: এটি আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হবে।
  • তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন: এটি আগামী ৬ ডিসেম্বর কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত হবে।

এই সম্মেলনগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকটকে আবারও আন্তর্জাতিক মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসতে চায়। বিশেষ করে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে যখন এই সংকট থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ সরে যাচ্ছে, তখন এই ধরনের সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আগামী ২৫ আগস্ট, ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা ঢলের আট বছর পূর্তির দিনে, কক্সবাজারে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তিন দিনের এই আন্তর্জাতিক আয়োজনটি (২৪-২৬ আগস্ট) শুধুমাত্র একটি সম্মেলন নয়, এটি আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের সমন্বয়ে একটি ব্যাপকভিত্তিক কর্মযজ্ঞ।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির ছবি সরাতে দূতদের ফোন, লিখিত আদেশ নেই

সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো:

  • মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি: রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানানো হবে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
  • আশার সঞ্চার: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আশার সঞ্চার করা এবং তাদের জীবনমানের উন্নতিতে সহায়তা করা।
  • জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ: মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
  • টেকসই সমাধান: এই মানবিক সংকটের একটি টেকসই এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের পথ খোঁজা।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়াও কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রোহিঙ্গাবিষয়ক আন্তর্জাতিক দূত, বিদেশে বাংলাদেশের মিশন, জাতিসংঘ সংস্থা এবং শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা প্রতিনিধি ও বিদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা নেতারা অংশ নেবেন।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে নতুন করে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা গত ১৮ মাসে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এর সঙ্গে আগে থেকে থাকা ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা যুক্ত হয়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই সংকট আরও জটিল হওয়ার অন্যতম কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সব ধরনের আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে, যা বাংলাদেশের ওপর মানবিক ও অর্থনৈতিক চাপ বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করছে। মালয়েশিয়া সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস দেশটির জাতীয় সংবাদ সংস্থা বারনামাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার প্রভাব, বিশেষ করে আসিয়ান সদস্য দেশগুলোর চেয়ার হিসেবে দেশটির ভূমিকা কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়