জুলাই অভ্যুত্থান: অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম আনুষ্ঠানিক অভিযোগ
 
									ছবি: সংগৃহীত
জুলাই গঅভ্যুত্থানের মধ্যে রাজধানীর চাঁনখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা হয়েছে। মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
হাবিবুর রহমান ছাড়াও ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী, রমনা জোনের সাবেক এডিসি শাহ আলম মো. আকতারুল ইসলাম ও এসি মো. ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল সুজন, ইমাজ হোসেন ও নাসিরুল ইসলামকে সেখানে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে চারজন পলাতক।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ররিবার এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন।
সকল বিষয়ে ঐকমত্য হওয়া সম্ভব নয়: আলী রীয়াজ
ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো নিপীড়নকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বিবেচনা করে অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের উদ্যোগ নেওয়ার পর এই প্রথম কোনো মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হল।
ট্রাইব্যুনাল এই অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠন করলে জুলাই গঅভ্যুত্থানের প্রথম কোনো মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম সাংবাদিকদের বলেন, “ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল, সেটা নথিপত্র পর্যালোচনা করে চিফ প্রসিকিউটর আজ ট্রাইব্যুনালে ফরমাল চার্জ আকারে দাখিল করেছেন। এর ওপর ট্রাইব্যুনালে আজ শুনানি হবে। তারপর ট্রাইব্যুনাল পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করেব।”
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের দিন ৫ অগাস্ট চাঁনখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থী শহীদ আনাসসহ ৬ জনকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।
তদন্তে কী পাওয়া গেছে, সেই তথ্য তুলে ধরে চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ১১ এপ্রিল বলেন, “ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের নির্দেশে মাঠ পর্যায়ে থেকে ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে ৬ জনকে হত্যা করেন আসামিরা।”
চাঁনখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও ‘সম্পৃক্ততা’ রয়েছে মন্তব্য করে তাজুল বলেন, “যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটির তদন্ত চলছে, সেজন্য তাদেরকে এই মামলায় আসামি করা হয়নি। তবে নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনার যে ভূমিকা রয়েছে তাদের, সেটার বর্ণনা এই চার্জশিটে রয়েছে। কারণ শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে তার অধীনস্তরা মাঠ পর্যায়ে থেকে ওই নির্দেশনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতাকর্মীরা বাস্তবায়ন করেছেন।”
প্রধান প্রসিকিউটর বলেন, “চাঁনখারপুল এলাকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আরো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। সেসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়িত রয়েছেন। সেসব অপরাধের তদন্ত চলছে। তদন্ত সম্পন্ন হলেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে তদন্ত সংস্থা।
তিনি বলেন, “যেহেতু ৬ জনকে হত্যার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রথমেই সম্পন্ন হয়েছে, সেজন্য এটাই প্রথমে দাখিল করা হয়েছে।”
৯০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়াও দালিলিক তথ্য-প্রমাণ জমা দিয়েছিল তদন্ত সংস্থা। ৭৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দি, ১৯টি ভিডিও ক্লিপ, ১১টি পত্রিকার রিপোর্ট, ২টি অডিও কল রয়েছে সেখানে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি






































