যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের উচিত রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করা: ট্রাম্প
ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেনকে যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তি করার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি মনে করেন, ইউক্রেনের উচিত দোনেৎস্কের সম্পূর্ণ অঞ্চল রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দেওয়া, কারণ “রাশিয়া একটি বিশাল শক্তি, আর ইউক্রেন তা নয়”।
আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক গোপন বৈঠকের পর শনিবার (১৬ আগস্ট) ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) আলাস্কায় পুতিন ও ট্রাম্পের মধ্যে একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রয়টার্সের সূত্র অনুযায়ী, এই বৈঠকেই পুতিন শর্ত দেন যে, যদি ইউক্রেন সম্পূর্ণ দোনেৎস্ক অঞ্চল ছেড়ে দেয়, তাহলে রাশিয়া যুদ্ধ কমিয়ে আনতে রাজি। ট্রাম্প এই বার্তাটি পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে জানিয়ে দেন।
দোনেৎস্ক হলো ইউক্রেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল, যা ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার অন্যতম লক্ষ্যবস্তু। বর্তমানে এই অঞ্চলের এক-তৃতীয়াংশ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং রুশ বাহিনী সেখানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ট্রাম্প তার সামাজিকমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে লিখেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো একটি সরাসরি শান্তিচুক্তি। তিনি এটিকে নিছক একটি যুদ্ধবিরতি নয়, বরং একটি স্থায়ী সমাধান হিসেবে দেখছেন।
আরও পড়ুন: জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপ
ট্রাম্পের মতে, ইউক্রেন ও তাদের ইউরোপীয় মিত্রদের পূর্ববর্তী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবগুলো টেকসই হয়নি, তাই এবার আরও কার্যকর ও বাস্তবভিত্তিক একটি চুক্তি দরকার। তিনি পুতিন ও জেলেনস্কিকে নিয়ে একসঙ্গে বৈঠকে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, যাতে একটি সরাসরি চুক্তির পথ তৈরি হয়।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে।
নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে জেলেনস্কি লেখেন, যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে আগে হত্যা থামাতে হবে। কিন্তু রাশিয়া সে সদিচ্ছা দেখাচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, সোমবার (১৮ আগস্ট) তিনি ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন, যেখানে এই শান্তিচুক্তি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এটি হবে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির দ্বিতীয় মুখোমুখি বৈঠক। গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁদের প্রথম বৈঠকে তুমুল বাগ্বিতণ্ডা হয়েছিল।
ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা ট্রাম্পের এই শান্তি প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা আবারও ইউক্রেনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বলেছে।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল জানান, সোমবারের হোয়াইট হাউসের বৈঠকে জেলেনস্কির পাশাপাশি ইউরোপীয় নেতারাও উপস্থিত থাকবেন। তবে কারা কারা আমন্ত্রিত হয়েছেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। বিশ্লেষকরা এটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ বলে মনে করেন। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের ১০ লক্ষাধিক মানুষ হতাহত হয়েছেন, যার মধ্যে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








