গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে নিহত ১০০
ছবি: সংগৃহীত
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে গাজা সিটিতেই ৬১ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
এছাড়া, খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আরও ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। এতে করে চলমান সংঘাতে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৬১,৫০০ ছাড়িয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজা সিটির উত্তরে ত্রাণ বিতরণ নিশ্চিত করতে চেষ্টা চালানো লোকজনের ওপর হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হন।
দক্ষিণ গাজার নাসের হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, রাফাহের উত্তরে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি গুলিতে অন্তত ১৬ জন নিহত হন। গাজার জরুরি ও অ্যাম্বুলেন্স সেবার হিসাবে, উত্তরে ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা মানুষের ওপর গুলিতে আরও ১৪ জন নিহত এবং ১১৩ জন আহত হন। সব মিলিয়ে খাদ্যের সন্ধানে থাকা অন্তত ৩৭ জন এদিন নিহত হন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি অবরোধজনিত ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে অন্তত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু রয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে (অক্টোবর ২০২৩) অনাহার ও অপুষ্টিজনিত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩৫ জনে, যার মধ্যে ১০৬ জন শিশু রয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর ইসরায়েলি হামলার তীব্র সমালোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন: ইতালিতে নৌকাডুবিতে ২৬ অভিবাসীর মৃত্যু
তারা বলেছেন, এটি ‘ঔষধহত্যা’র সমতুল্য, যা গণহত্যার একটি উপাদান।
বিশেষ দূত ত্ল্যালেং মোফোকেং ও ফ্রান্সেসকা আলবানিজ বলেন, গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ধ্বংসের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস করার উদ্দেশ্য স্পষ্ট।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা সিটি ও আশেপাশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজা সিটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ, হামাসের অস্তিত্ব নির্মূল ও ২০২৩ সালের অক্টোবর হামলায় অপহৃত ২৫১ জনকে মুক্ত করার লক্ষ্যে অভিযান চালানো হবে। তবে, এই পরিকল্পনা ইসরায়েলের সামরিক প্রধান আইয়াল জামিরের সঙ্গে মতবিরোধ সৃষ্টি করেছে, যিনি এই পদক্ষেপের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এই অভিযান মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং অপহৃতদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলবে।
স্পেনসহ ২৫টি দেশ একযোগে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে ইসরায়েলের কাছে গাজার মানবিক সহায়তা প্রবাহে কোনো বাধা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, বন্দীদের মুক্তি ও নিরাপদে সহায়তা প্রবাহ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৬১,৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া, ক্ষুধা ও অপুষ্টির কারণে ২৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ১০৬ জন শিশু রয়েছে।
এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে গাজার মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








