ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু

ফাইল ছবি
দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বুধবার (১ অক্টোবর) সকাল ৮টার মধ্যে আরও দুইজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছরের শুরু থেকে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০০ জনে।
বুধবার (১ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া দুইজনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা। এর পাশাপাশি গত একদিনে নতুন করে ৪৯০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি রোগী (১৩৮ জন) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঢাকা বিভাগে ১০০ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৭৮ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৬৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৮ জন এবং রংপুর বিভাগে ২২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই পরিসংখ্যান প্রতিফলিত করছে, যে কোন এলাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও সতর্কতার প্রয়োজন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট ২০০ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে—৯৫ জন।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরেই ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৬ জন
বরিশাল বিভাগে ৩২ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জন, খুলনা বিভাগে ৫ জন এবং ঢাকা বিভাগে ৩ জন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন।
ডেঙ্গুর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে বরিশাল ও ঢাকায় হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অল্প বয়সী ও জটিল রোগীদের ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা না পেলে অবস্থা গুরুতর হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর ইতিমধ্যে হাসপাতালগুলোতে জরুরি বিভাগের প্রস্তুতি জোরদার করেছে এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম ও খাটের পরিমাণ বৃদ্ধির নির্দেশনা দিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জনসাধারণকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঘরবাড়ি ও আশপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দিয়েছে। মশার বিস্তার রোধে পানি জমতে না দেওয়া, খোলা স্থানে পানি না রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে নাগরিকদের ব্যক্তিগত সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগীর তাপমাত্রা, মাথা ব্যথা, মাংসপেশির ব্যথা ও রক্তপাতজনিত উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
চলতি বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উদ্বেগজনক রূপ নিয়েছে। সরকারি রিপোর্ট ও হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে সংক্রমণ তীব্র। তাই জনসাধারণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীদেরও সতর্কতা ও প্রস্তুতি আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি