২০২৫ এইচএসসি ও সমমানের পুনঃনিরীক্ষণের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ
ফাইল ছবি
দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডে অনুষ্ঠিত উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি), আলিম ও সমমান পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণ বা খাতা চ্যালেঞ্জের ফল রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় প্রকাশিত হয়েছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানানো হয়েছে, পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বোর্ডের ওয়েবসাইটে ফল দেখতে পারবেন। অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার জানান, শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং পুনঃনিরীক্ষণের প্রতিটি খাতাই সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করা হয়েছে।
শিক্ষাবোর্ড-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এবার খাতা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য রেকর্ডসংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে। দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডে মোট ২,২৬,০০০ শিক্ষার্থী মোট ৪,২৮,০০০ খাতা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন। সর্বাধিক আবেদন পড়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে, আর সবচেয়ে কম পড়েছে বরিশাল বোর্ডে।
বিষয়ভিত্তিকভাবে সবচেয়ে বেশি আবেদন এসেছে ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে। শিক্ষার্থীরা প্রতি বিষয়ে ১৫০ টাকা ফি দিয়ে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন। আবেদন গ্রহণের সময়কাল ছিল ১৬ অক্টোবর ফল প্রকাশের পর ১৭ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত সাত দিন।
ঢাকা বোর্ডে ৮৯,৬৭১ জন শিক্ষার্থী পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ২,৩৩১ জনের ফল পরিবর্তিত হয়েছে এবং ২,৩৭৩ জনের গ্রেড পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষভাবে, নতুন করে ২০১ জন জিপিএ-৫ অর্জন করেছেন এবং ৩০৮ জন ফেল থেকে পাস হয়েছেন।
ঢাকা বোর্ডের খাতা চ্যালেঞ্জে ৬৬,১৫০ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেছেন, মোট আবেদনকৃত খাতা ১,৩৬,৫০৬টি।
আরও পড়ুন: ১৬ নভেম্বর এইচএসসির খাতা পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশ
অন্যান্য শিক্ষাবোর্ডের আবেদন ও খাতা সংখ্যা
- বরিশাল বোর্ড: ৮,১১১ জন, ১৭,৪৮৯ খাতা
- কুমিল্লা বোর্ড: ২২,১৫০ জন, ৪২,০৪৪ খাতা
- রাজশাহী বোর্ড: ২০,৯২৪ জন, ৩৬,২০৫ খাতা
- যশোর বোর্ড: ২০,৩৯৫ জন, ৩৬,২০৫ খাতা
- চট্টগ্রাম বোর্ড: ২২,৫৯৫ জন, ৪৬,১৪৮ খাতা
- সিলেট বোর্ড: ১৩,০৪৪ জন, ২৩,৮২০ খাতা
- দিনাজপুর বোর্ড: ১৭,৩১৮ জন, ২৯,২৯৭ খাতা
- ময়মনসিংহ বোর্ড: ১৫,৫৯৮ জন, ৩০,৭৩৬ খাতা
- বিএম-ভোকেশনাল বোর্ড: ১২,০৭ জন, ১৫,৩৭৮ খাতা
- মাদ্রাসা (আলিম) বোর্ড: ৭,৯১৬ জন, ১৪,৭৩৩ খাতা
এই তথ্য থেকে বোঝা যায়, দেশের শিক্ষাবোর্ডগুলোতে খাতা চ্যালেঞ্জ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বছরের পর বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১২,৫১,১১১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৭,২৬,৯৬০ জন, পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫৮.৮৩ শতাংশ।
ফেল করেছেন ৫,০৮,৭০১ জন, যা ৪১.১৭ শতাংশ।
ছাত্রীদের পাসের হার ৬২.৯৭ শতাংশ, আর ছাত্রদের পাসের হার ৫৪.৬০ শতাংশ। এটি প্রমাণ করে যে মেয়েদের শিক্ষাগত সাফল্য এবারও তুলনামূলকভাবে বেশি।
ফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বোর্ডের ওয়েবসাইট বা মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে পুনঃনিরীক্ষণের ফল জানতে পারবে। অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রতি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। পুনঃনিরীক্ষণের প্রতিটি খাতা সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করা হয়েছে।
এবার খাতা পুনঃনিরীক্ষণে আবেদন সংখ্যা রেকর্ডভঙ্গ হওয়ায় বোর্ডগুলো যথাযথ সতর্কতার সঙ্গে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
২০২৫ সালের খাতা চ্যালেঞ্জের ফলাফল প্রমাণ করেছে, শিক্ষার্থীরা নিজের শিক্ষা অর্জনে কতটা সচেতন এবং ফলাফলের প্রতি তাদের মনোযোগ কতটুকু। ঢাকার মতো বড় বোর্ডে হাজার হাজার শিক্ষার্থী গ্রেড পরিবর্তনের সুযোগ পেয়েছেন, যা তাদের শিক্ষা জীবনকে নতুন দিক দিতে পারে। একই সঙ্গে খাতা চ্যালেঞ্জ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নির্ভুলতা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য ইতিবাচক সংকেত হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








