News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:৫৭, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১৪:০৯, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

বিটিভি ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় দেখানো হবে শেখ হাসিনার রায়

বিটিভি ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় দেখানো হবে শেখ হাসিনার রায়

ফাইল ছবি

২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বহুল আলোচিত মামলার রায় আগামীকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ মামলার আসামি।

বিচারের গুরুত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) রায় সরাসরি সম্প্রচার করবে। পাশাপাশি রয়টার্স, ট্রাইব্যুনালের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় পর্দায় সরাসরি সম্প্রচারের আয়োজন করা হয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।

গত ১৩ নভেম্বর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন। 

প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ, বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

চলতি বছরের ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করে। মামলার এক পর্যায়ে তৃতীয় আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হন এবং ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রথম বিচারিক কার্যক্রম হিসেবে গত বছরের ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনার মামলার শুনানি শুরু হয়, একই দিন তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়।

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ সাজার প্রত্যাশা চিফ প্রসিকিউটরের

রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছে প্রসিকিউশন।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, এই অপরাধের দায়ে আসামিদের যেন সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়।

প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ জানান, বাংলাদেশের ইতিহাসে নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না হওয়ার নজির থাকলেও এই মামলায় কোনো অনুকম্পা প্রদর্শনের সুযোগ নেই। 

তিনি আরও জানান, শেখ হাসিনা দণ্ডিত হলে সাজার পরোয়ানা ইন্টারপোলে পাঠানো হবে।

অন্যদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দোষ দাবি করে খালাস প্রার্থনা করেন। রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ তাঁর খালাস চান।

এই মামলায় মোট ৫৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পিতা, আন্দোলনে স্বজনহারা বহু পরিবার, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম (স্টার উইটনেস), দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

প্রসিকিউশনের অভিযোগ অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই–আগস্টে চলমান ছাত্র–জনতার আন্দোলনে ব্যাপক আক্রমণ, গুলি ও হত্যাকাণ্ড, মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ, রংপুর, ঢাকা ও আশুলিয়ায় পৃথক হত্যাকাণ্ডসহ
মোট পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

জুলাই–আগস্ট আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত প্রথম মামলার রায়ের মধ্য দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শেষ হতে যাচ্ছে আগামীকাল।

ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার সকালেই আনুষ্ঠানিকভাবে রায় ঘোষণা করবে, যা জাতির জন্য বহুল প্রত্যাশিত এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়