লিবিয়া উপকূলে নৌকা ডুবে ৪ বাংলাদেশির মৃত্যু
ছবি: সংগৃহীত
লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আল-খুমস উপকূলে প্রায় ১০০ জন অভিবাসী বহনকারী দুটি নৌকা ডুবে চারজনের মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করেছে লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে ঘটে যাওয়া এ দুর্ঘটনার তথ্য শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রকাশ করা হয়। ইউরোপে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে বিপজ্জনক মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুট ব্যবহার করতে গিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
রেড ক্রিসেন্ট জানায়, প্রথম নৌকাটিতে মোট ২৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। নৌকাটি আল-খুমস উপকূলের কাছে উল্টে গেলে চারজন বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জীবিতদের উদ্ধার করে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
দ্বিতীয় নৌকাটিতে ছিলেন মোট ৬৯ জন — ৬৭ জন সুদানি এবং দুইজন মিশরীয় নাগরিক। এ নৌকায় আটজন শিশু ছিল বলে রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে। তবে এ নৌকার যাত্রীদের মৃত্যুর বিষয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকর্মীরা জীবিত ও মৃতদের খোঁজে এখনো তল্লাশি চালাচ্ছে।
দুটি নৌকা ডুবে যাওয়ার খবর পেয়ে রাতেই উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। রেড ক্রিসেন্ট জীবিতদের সহায়তা এবং উদ্ধারকৃত মরদেহসমূহের ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে কালো বডি ব্যাগ ও দুর্ঘটনা-পরবর্তী বিশৃঙ্খলার চিত্র দেখা যায়।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, নৌকাগুলো উত্তর আফ্রিকার বন্দর শহর আল-খুমস থেকে রওনা হয়ে উত্তর আফ্রিকা ও ইতালির মধ্যবর্তী মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুটে চলছিল—যা বিশ্বের “সবচেয়ে মারাত্মক অভিবাসন রুট” হিসেবে পরিচিত।
আরও পড়ুন: নতুন পোশাকে মাঠে নেমেছে পুলিশ
আইওএম-এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত মধ্য ভূমধ্যসাগরে ১,৫০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। এর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ঘটেছে লিবিয়ার উপকূলে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত নিরাপত্তা সংস্থা ফ্রন্টেক্স জানিয়েছে, এই বছর মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুট দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানো প্রায় ৫৯,০০০ মানুষের বেশিরভাগই লিবিয়া থেকে যাত্রা করেছে।
অবৈধ অভিবাসী প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যেও উদ্বেগ বাড়ছে।
এই সপ্তাহের শুরুতে লিবিয়ার উপকূলে আরেকটি ছোট নৌকা ডুবে গেলে কয়েক ডজন অভিবাসী নিখোঁজ হন এবং ধারণা করা হচ্ছে, তাদের অনেকেই মারা গেছেন। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় থাকার পর সুদান, সোমালিয়া, ক্যামেরুন ও নাইজেরিয়ার সাতজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
লিবিয়া হয়ে ইউরোপগামী অনিয়মিত অভিবাসী প্রবাহ থামেনি; বরং আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। আল-খুমসের সর্বশেষ ট্র্যাজেডি আবারও প্রমাণ করেছে, ভিড় এবং অনিরাপদ নৌযানে প্রাণঘাতী যাত্রা থামাতে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জরুরি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








