ঢাকায় ছয় স্থানে ককটেল হামলা, এক পথচারী আহত
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এক রাতে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আগারগাঁও, মিরপুর, হাতিরঝিল, পল্লবী, বিমানবন্দর রেলস্টেশন এবং মৌচাকসহ ছয়টি স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে সরাসরি হতাহতের খবর না থাকলেও একজন পথচারী আহত হয়েছেন। ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ জড়িতদের শনাক্তে তৎপর।
আগারগাঁও
শনিবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে আগারগাঁওয়ের এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ভবনের পাশে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান জানান, “এডিবি ভবনের সামনের সড়কে হঠাৎ একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। পাশেই পুলিশ ডিউটিতে ছিল। মোটরসাইকেলে এসে দুর্বৃত্তরা অতর্কিতভাবে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি এবং জড়িতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।”
শেরেবাংলা থানার ওসি ইমাউল হক বলেন, “এডিবি ভবনের সামনের বিস্ফোরণে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।”
মিরপুর ও হাতিরঝিল
শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার আগে মিরপুর এবং হাতিরঝিল এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। মিরপুরের বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ের ভিতরে সন্ধ্যা ৬টায় বিস্ফোরণ ঘটে। এখানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
এরপর কিছুক্ষণ পর হাতিরঝিল মধুবাগ ব্রিজের ওপর থেকে নিচের সড়কে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে সেতুর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরে যায় এবং একজন মোটরসাইকেল আরোহী সামান্য আহত হন। হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক ফুয়াদ আহমেদ বলেন, “সংবাদ পাওয়ার পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বিস্ফোরণটি তদন্ত করা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: জেনেভা ক্যাম্পে গোপন ককটেল কারখানার সন্ধান, উদ্ধার ৩৫
ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের ডিসি ইবনে মিজান জানিয়েছেন, “হাতিরঝিল মধুবাগ ব্রিজের নিচে ককটেল বিস্ফোরণে একজন মোটরসাইকেল আরোহী সামান্য আহত হয়েছেন। তাঁর মোটরসাইকেলও সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
পল্লবী
শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে পল্লবী মেট্রো স্টেশনের ১৭৭ নম্বর পিলারের নিচে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা ককটেল নিক্ষেপ করে দ্রুত পালিয়ে যায়। হঠাৎ বিস্ফোরণে মেট্রো স্টেশনে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন।
পল্লবী থানার ওসি মফিজুর রহমান বলেন, “মেট্রো রেলের একটি পিলারের নিচে দুটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে এটি ককটেল নয়, চকোলেট পটকা ছিল, যার ওপর স্কচটেপ মেরেছিল দুর্বৃত্তরা। ভীতি সৃষ্টি করতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।”
বিমানবন্দর রেলস্টেশন
শনিবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে বিমানবন্দর রেলস্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিমানবন্দর থানার ডিউটি অফিসার এসআই মাসুদ পারভেজ বলেন, “রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কেউ হতাহত হয়নি। রেলওয়ে পুলিশ বিষয়টি দেখছে। দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে গেছে।”
নিউ ইস্কাটন রোড
রবিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডের ওয়াক্ফ ভবনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আবদুল বাসির (৫০) নামের এক পথচারী আহত হন। জানা যায়, আবদুল বসির একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এবং সকালে হেঁটে অফিসে যাচ্ছিলেন। বিস্ফোরণে তাঁর পা ও হাত জখম হয়।
অন্যান্য স্থান
শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মৌচাক ক্রসিংয়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, উড়ালসড়ক থেকে কিছু দুর্বৃত্ত নিচে ককটেল ফাটিয়ে পালিয়ে যায়।
বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে মিরপুরের বিআরটিএ এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে, কোনো হতাহতের খবর নেই।
শনিবার রাত ১২টার দিকে হাজারীবাগের বেড়িবাঁধ রোডে শেখ ফজিলাতুন নেছা কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, কোনো হতাহত হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, সব ঘটনার তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের শনাক্তে তৎপরতা অব্যাহত আছে। স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করেছে এবং সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








