‘অহন আম্গো পাঁচ ট্যাকা বেশি না দিলে কবে দেবেন মামা’
নিউজ ডেস্ক
‘ঈদ বকশিশ’যুক্ত হওয়ায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া গুণছেন নগরবাসী। ঈদ উপলক্ষে রাজধানীতে গত সোমবার থেকে কোনো কোনো রুটে রোববার থেকে বকশিশের নামে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
বাস, লেগুনা, সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা সব ধরনের পরিবহনেই ভাড়ার সঙ্গে ঈদ বকশিশ নেয়া হচ্ছে। বকশিশের কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভাড়া দ্বিগুণ হয়েছে।
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানীর বেশিরভাগ মানুষ এখন গ্রামের বাড়িতে। ফলে ফাঁকা হয়ে পড়েছে নগরীর সড়কগুলো। রাজপথে গাড়ি চলছে বাধাহীন।
বুধবার (৫ জুন) সারাদেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে।
পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন ও পরের দিন ভাড়ার সঙ্গে বকশিশ নেবেন তারা।
ঈদ বকশিশে কারও কারও আপত্তি না থাকলেও কেউ কেউ নির্ধারিত ভাড়ার বেশি দিতে রাজি হচ্ছেন না। এতে কোথাও কোথাও বকশিশ নিয়ে পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের মধ্যে বচসাও হচ্ছে।
মঙ্গলবার থেকে শ্রাবণ পরিবহন (গুলিস্তান-রায়েরবাগ, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে) ভাড়া নিচ্ছে ১৫ টাকার স্থলে ২০ টাকা। আর চিটাগং রোডের ভাড়া নিচ্ছে ২০ টাকার স্থলে ৩০ টাকা।
বুধবার সকালে শ্রাবণ পরিবহনের কন্ডাক্টর শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অহন আমগো পাঁচ ট্যাকা বেশি না দিলে কবে দেবেন মামা। আমরা ঈদ না কইরা আপনেগো টানতাছি, বকশিশ কি আমরা পাই না?’
যাত্রাবাড়ী থেকে শনির আখড়া রুটে চলাচলকারী বোরাক পরিবহন বুধবার ভাড়া নিচ্ছে ৫ টাকার স্থলে ১০ টাকা। যাত্রাবাড়ী থেকে গাবতলীর রুটে চলাচলকারী গাবতলী লিংক পরিবহন নিচ্ছে ৪০ টাকার স্থলে ৫০ টাকা।
যাত্রাবাড়ী-মিরপুর রুটে চলাচলকারী শিকড় পরিবহনের কন্ডাক্টর বাবুল হোসেন বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে মিরপুরের ভাড়া ৩০ টাকা। এখন ৫/১০ টাকা বেশি নেই মামা। তয় কেউ না দিলে জোর করি না।
যাত্রাবাড়ী থেকে সদরঘাট রুটে লেগুনার ভাড়া ১২ টাকা। এ রুটে গত রোববার থেকেই ১৫ টাকা করে ভাড়া আদায় করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তবে বুধবার এক কন্ডাক্টর ঈদের কারণে ভাড়া ২০ টাকা চাইলে উত্তেজিত হয়ে উঠেন যাত্রীরা। শেষ পর্যন্ত কন্ডাক্টর ১৫ টাকা করে ভাড়া নিতে বাধ্য হন।
এ রুটের নিয়মিত যাত্রী মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘সদরঘাটে চলাচলকারী লেগুনাগুলো ঈদের তিন দিন আগে থেকেই তিন টাকা বেশি ভাড়া নেয়া শুরু করেছে। কেউ কেউ আবার ২০ টাকাও চান। তবে ২০ টাকা ভাড়া চাওয়া অন্যায়।’
পল্টন থেকে মিরপুর যাবেন সৌরভ কাওছার। তিনি বলেন, ‘এখান থেকে মিরপুরের ভাড়া ২৫ টাকা। এখন ৩০ টাকা নিচ্ছে। এটা মেনে নেয়া ছাড়া উপায় কী? এতে আমি খুব বেশি আপত্তিও করি না।’
শনির আখড়া বাসস্ট্যান্ডে রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন সুজন হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘আমগো লাইগ্যা ঈদ নাই। দুইডা পয়সার আশায় ঈদের দিনও রিকশা চালাই। তার উপরে আইজ যে বৃষ্টি, খেপই তো নাই। ভাড়া অহন ১০/২০ ট্যাকা বেশি নেই। সবাই খুশি হইয়াই বেশি দেয়।’
নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএস








