News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:৪২, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পাকিস্তানে টিটিপির হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত মাদারীপুরের যুবক

পাকিস্তানে টিটিপির হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত মাদারীপুরের যুবক

ছবি: সংগৃহীত

দুবাই যাওয়ার কথা বলে দেশ ছাড়লেও শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে গিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এ যোগ দেন মাদারীপুরের ছোট দুধখালী গ্রামের যুবক ফয়সাল মোড়ল (২১)। পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন তিনি।

পাকিস্তানি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলার দর্শখেলের শাহ সেলিম থানার কাছে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে টিটিপির অন্তত ১৭ সদস্য নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ফয়সালও ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া আইডি কার্ড, টাকা ও অন্যান্য কাগজপত্র দেখে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। পরে পাকিস্তানি সাংবাদিক জাওয়াদ ইউসুফজাই নিহতদের ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করলে পরিবার শনাক্ত করে।

ফয়সালের মা চায়না বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যারা মেরেছে, তাদের বিচার চাই। আর আমি চাই, আমার ছেলের মরদেহ সরকার যেন দেশে ফিরিয়ে আনে।

ফয়সালের চাচা আব্দুল হালিম মোড়ল বলেন, আমরা দ্রুত ফয়সালের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি। আর তাকে যারা পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করিয়েছে তাদের বিচার করতে হবে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের মার্চে হিজামা সেন্টারে চাকরির কথা বলে দুবাই যাওয়ার পরিকল্পনা করে ফয়সাল। পরে ছয় মাস পর বড় ভাই আরমান মোড়লকে ফোন করে জানায়, সে দুবাই আছে এবং ভালো আছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানাতো না। ঈদুল আজহার আগে সর্বশেষ ফোনে পরিবারের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। এরপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ ছিল না।

দেশে থাকতে ফয়সাল ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলত এবং মসজিদ ও হাটবাজারের সামনে আতর, টুপি, তাসবিহসহ ধর্মীয় সামগ্রী বিক্রি করত। 

আরও পড়ুন: ফরিদপুরে সালিশ বৈঠক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২৪

পরিবার অভিযোগ করছে, এক চক্র প্রলোভন দেখিয়ে তাকে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত করেছে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরিবার চাইলে নিহতের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা সহযোগিতা করব। একই সঙ্গে কেউ যাতে এমন নিষিদ্ধ সংগঠনে আর যুক্ত হতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজধানীর কিছু চক্র যুবকদের ফাঁদে ফেলে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। 

তাদের মতে, এসব চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে।

ফয়সালের পিতা আব্দুল আউয়াল মোড়ল পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ইলেকট্রিশিয়ান, বড় ভাই আরমান হোসেন কাজ করেন দারাজের ডেলিভারিম্যান হিসেবে। পরিবার এখন একদিকে প্রিয় সন্তানের মৃত্যুশোকে কাতর, অন্যদিকে মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছে।

গত এক বছরের বেশি সময়ে পাকিস্তানে টিটিপির হয়ে যুদ্ধে অন্তত কয়েকজন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার খবর এসেছে। গত এপ্রিল মাসে উত্তর ওয়াজিরিস্তানে অভিযানে আহমেদ জোবায়ের নামে আরেক বাংলাদেশি নিহত হয়েছিলেন। এসব ঘটনায় বাংলাদেশে টিটিপি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়