কব্জিকাটা আনোয়ার গ্রুপের পর মোহাম্মদপুরের নতুন আতঙ্ক আইডিসি
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় নতুন করে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং ‘আই ডোন্ট কেয়ার’ (আইডিসি)। কব্জিকাটা আনোয়ার গ্রুপের পর এবার এই গ্যাংয়ের তাণ্ডবে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মারামারি ও খুনের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত এই গ্যাংটি সম্প্রতি আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
‘আই ডোন্ট কেয়ার’ নামের এই গ্যাংটি নিজেদের পরিচয় দেয় আইডিসি গ্রুপ হিসেবে। তাদের প্রধান সদস্য সোহেল, যাকে ‘বিগগেস্ট মোহাম্মদপুর’ নামে পরিচিত।
সোহেল ফেসবুকে ‘বিয়িং আইডিসি-বিগগেস্ট মোহাম্মদপুর’ নামে একটি পেজের অ্যাডমিন, যেখানে প্রায় ১০ হাজার সদস্য রয়েছে। সোহেলকে কখনও টাকার ওপর শুয়ে থাকতে, কখনও পার্টি করতে দেখা যায়।
আইডিসি গ্যাংয়ের সঙ্গে কব্জিকাটা আনোয়ার গ্রুপের সদস্য শ্যুটার আনোয়ার, রাফাত, তুষার ও ইউনুসের মতো বিভিন্ন মামলার আসামিরাও জড়িত। তাদের একত্রে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের তথ্য পাওয়া গেছে।
মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় আইডিসি গ্যাংয়ের সদস্যরা রাতের বেলা নির্জন স্থানে লুকিয়ে থেকে পথচারীদের ওপর আক্রমণ করে। তারা ছুরি দিয়ে পায়ের রগ কেটে দেয়, যাতে ভুক্তভোগী চিৎকার করতে না পারে।
এক ভুক্তভোগী জানান, তার পায়ের রগ কেটে দেওয়ার পর আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী এসে তাকে আক্রমণ করে। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: আগারগাঁও থেকে অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের চাঁদাবাজ ‘স্মার্ট’ হাসান
গ্যাংয়ের সদস্যরা মাদক ব্যবসা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ড প্রচার করে এবং নতুন সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করে।
র্যাব-২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খালিদুল হক হাওলাদার জানান, কিশোর অপরাধীরা তাদের সক্রিয় অবস্থানকে জানান দিতে এবং ভাইরাল হতে চায়, যা নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসীদের উৎপাত ঠেকাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ইবনে মিজান বলেন, ভাসমান লোকজন তাদের অভাব ও বেকারত্বের কারণে কাউকে জিম্মি করে বা ছিনতাইকে অর্থ উপার্জনের উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছে। তিনি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন এবং জনগণকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
মোহাম্মদপুর ও আদাবরের বাসিন্দারা জানান, গ্যাংয়ের তাণ্ডবে তারা আতঙ্কিত। অপরাধের তুলনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা কম বলে তারা অভিযোগ করেন।
তারা আরও জানান, গ্যাংয়ের সদস্যরা নির্জন স্থানে লুকিয়ে থেকে আক্রমণ করে, যা তাদের নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জনগণকেও অপরাধ দমনে সচেতন হতে হবে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, বেকারত্ব দূরীকরণ এবং যুব সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করা অপরাধ কমাতে সহায়ক হতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








