মোহাম্মদপুরে গণপিটুনিতে ২ ছিনতাইকারী নিহত

ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ছিনতাই করতে এসে গণপিটুনিতে আবারও দুই ছিনতাইকারী নিহত হয়েছে। একই ঘটনায় আরও দুইজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহতদের বিরুদ্ধে একাধিক ছিনতাই ও ডাকাতির মামলা ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিক আহমেদ।
স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে নবীনগর হাউজিং ও বসিলা ৪০ ফিট এলাকার খালের সাঁকোর কাছে কয়েকজন ছিনতাইকারী দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। এরপর ভোররাত চারটার দিকে একই স্থানে তারা দ্বিতীয় দফায় ছিনতাই করতে আসে। এসময় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ঘেরাও করে ফেলে। চারজন ছিনতাইকারীকে ধরে গণপিটুনি দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুজনকে গুরুতর অবস্থায় জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
নিহতদের মধ্যে হানিফ (২৬), সবুজ, সুজন (১৯, ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিনের বাসিন্দা) ও শরীফ (২০, ভোলা লালমোহনের বাসিন্দা)।
তবে ভিন্ন সূত্রে ভিন্ন নাম পাওয়া গেলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে, নিহতরা সক্রিয় ছিনতাইকারী এবং তাদের নামে চারটির বেশি মামলা রয়েছে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন জুয়েল ও শরীফ, আবার কিছু প্রতিবেদনে তাদের পরিচয় এসেছে সুজন ওরফে বাবলু এবং নাটা ফয়সাল নামে। সবাইকে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মোহাম্মদপুরে ছিনতাইয়ের অভিযোগে গণপিটুনিতে নিহত ১
এলাকাবাসী দাবি করেন, আহত সুজন ও ফয়সাল ‘রক্তচোষা জনি’ নামে কুখ্যাত এক কিশোর গ্যাং প্রধানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। দীর্ঘদিন ধরে এই গ্যাং ঢাকা উদ্যান ও নবীনগর এলাকায় ছিনতাই করে আসছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসন বহুবার এদের গ্রেফতার করলেও অল্প দিনের মধ্যেই তারা জামিনে বের হয়ে আবারও একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় বাসিন্দারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক (কিছু প্রতিবেদনে রফিক আহমেদ) বলেন, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। সেখানে দুইজন মারা যায় এবং দুইজন চিকিৎসাধীন আছে। নিহত ও আহতদের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে।
নিহত সুজন ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার চরটিট্রা এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম জাহাঙ্গীর আলম। শরীফ ভোলার লালমোহন উপজেলার শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা, মৃত জাহাঙ্গীরের ছেলে। দুজনই মোহাম্মদপুরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, প্রতিদিনই এ চক্র ছিনতাই চালাত। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত পথচারীদের টার্গেট করে টাকা-পয়সা, মোবাইল, গহনা ছিনিয়ে নিত। তাদের হাতে একাধিকবার সাধারণ মানুষ আহতও হয়েছেন। এরকম পরিস্থিতিতে এলাকাবাসী আর সহ্য করতে না পেরে এবার সরাসরি প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি