আবার রণক্ষেত্র চবি, সহ-উপাচার্যসহ আহত দেড় শতাধিক
ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শনিবার (৩০ আগস্ট) গভীর রাত থেকে শুরু হওয়া উত্তেজনা রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাত সোয়া ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে অন্তত ৭০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। একপর্যায়ে স্থানীয়রা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত সাড়ে তিনটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একই এলাকায় আবারও সংঘর্ষ বাঁধে। সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস থেকে এগিয়ে এলে স্থানীয়রা জোবরা গ্রামে জড়ো হয়ে পাল্টা আক্রমণ চালান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়।
আরও পড়ুন: মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে চবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা
সংঘর্ষ শান্ত করতে ঘটনাস্থলে যান সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন ও প্রক্টর তানভীর হায়দার আরিফ। কিন্তু উত্তেজিত জনতার নিক্ষেপ করা ইটের আঘাতে কামাল উদ্দিন আহত হন। এ সময় প্রক্টর তানভীর হায়দার আরিফ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। এর আগে রাতের ঘটনায় দুই সহকারী প্রক্টরও আহত হয়েছিলেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে এক নারী শিক্ষার্থী একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। শনিবার রাত ১২টার দিকে তিনি ওই ভবনে প্রবেশ করতে গেলে ভবনের দারোয়ানের সঙ্গে তাঁর বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দারোয়ান তাঁকে মারধর করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায় এবং দারোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইলে তিনি পালিয়ে যান। তখন স্থানীয়রা মাইকিং করে লোক জড়ো করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।
অন্যদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা প্রথমে হামলা চালায় এবং বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে।
সংঘর্ষ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরের সদস্যদের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে দেখা যায়। তবে দুপুর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি চোখে পড়েনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। প্রক্টরের গাড়িসহ পুলিশের তিনটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্যই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত (রবিবার বিকেল) বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সংঘর্ষ চলমান ছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো অবস্থান জানানো হয়নি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








