News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:৪৫, ৩০ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ২১:০২, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

সিটি নির্বাচন: লাভের পাল্লা আ’লীগের দিকে!

সিটি নির্বাচন: লাভের পাল্লা আ’লীগের দিকে!

ঢাকা: সিটি নির্বাচনে জয় পরাজয় নিয়ে ভাবছে না সরকারী দল আওয়ামী লীগ। ফলাফল যাই হোক না কেন, এর সুদূরপ্রসারী ফসল নিজেদের ঘরেই উঠবে বলে মনে করছে তারা। দলের একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই জানিয়েছেন তারা।

দলের নেতারা বলছেন, অনেক আগে থেকেই বিএনপি বলে আসছে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনও নির্বাচনে অংশ নেবে না। অপরদিকে, আ’লীগের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা ভালো করেছে। তারপরও তারা একথা বলছে। এ থেকে বোঝা যায় তারা বিভ্রান্তিমূলক কথা বলছেন। নেতারা বলছেন, ৫ জানুয়ারি থেকে নির্বাচনের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করছে বিএনপি-জামায়াত। এই আন্দোলন দীর্ঘ হওয়ায় জনগণ এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। জনসম্পৃক্ততা না থাকায় এ আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে।

আর সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপের কারণে সহিংসতাও বন্ধ হয়েছে। ফলে এখন খাদে পড়ে গেছে বিএনপি। এখন তাদের সিটি নির্বাচন করা ছাড়া কোনও পথ খোলা নেই। একইসঙ্গে আন্দোলনরত বিএনপি-জামায়াত জোটকে সিটি নির্বাচনে আনতে পেরেছে আ’লীগ। এটাই আ’লীগের বড় জয়।

এসব বিবেচনায় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিলেও ভালো না নিলেও ভালো, এতে আওয়ামী লীগেরই লাভ হবে। অংশ নিলে আরো বেশি লাভ হবে। বিএনপি যদি এই নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে ঢাকা ও চট্টগ্রামে মেয়র ও কাউন্সিলরপদগুলো একচেটিয়াভাবে আওয়ামী লীগের হবে। ফলে এসব এলাকা আওয়ামী লীগের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নিয়ে একটাতেও জয়ী হয়, তারপরও তারা বলতে পারে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। কিন্তু একথা বললে তা দেশি-বিদেশি কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। তখন আওয়ামী লীগ বলতে পারবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করেই তো বিএনপি জয়ী হয়েছে। অতীতেও হয়েছে। তারপরও তারা ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছে। এটা বিএনপির ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো। তাই বিএনপিকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তখনও দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। দলীয় সূত্র জানায়, সিটি নির্বাচনে ফলাফল যাই হোক আদতে জয়ী হবে আ’লীগ। কেননা আন্দোলনরত বিএনপিকে সিটি নির্বাচনে আনতে বাধ্য করতে পেরেছে তারা। আর সিটি নির্বাচনে যোগ দিয়ে একটি সিটিতেও জয়ী হবার পর বিএনপি যদি দাবি করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না- সেই দাবি দেশে বিদেশে জোরালো হবে না। ফলে বাস্তব জয় আওয়ামী লীগেরই হবে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, “খালেদা জিয়া সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আসবেন। ২০১৯ সালের সংসদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে আসবেন। এর কোন বিকল্পও নেই।”

তিনি বলেন, “৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলে তারা গণতন্ত্র বোঝেন না। তারা রাজনীতি বোঝেন না। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য ৫ জানুয়ারি নির্বাচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যেন স্বাধীনতার সুফল দেশের মানুষ পায়।”

খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা নাকি ফাঁদ পাতার জন্য সিটি নির্বাচন দিয়েছি। আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা কখনো ফাঁদ পাতেন না। বরং বিএনপি ফাঁদ পাতেন এবং নিজেদের ফাঁদে ধরা পড়েন।”

তিনি বলেন, “বিএনপি নির্বাচনে আসবে এজন্য তাদেরকে সাধুবাদ। কিন্তু সন্ত্রাস করে নির্বাচন ভণ্ডুল করার চেষ্টা করবে, আবার নির্বাচনে হেরে গেলে মানবে না, নির্বাচন নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করবে, সন্ত্রাস করবে- সে সুযোগ দেওয়া হবে না।”

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। আমরা সব সময় চাই যেকোনও নির্বাচন সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য হোক। সে লক্ষ্যেই সব সময় আমরা কাজ করে আসছি। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন এবং বড়ো কয়েকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ।” আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি বলেন, “ফলাফল যাই হোক, সেটা আমরা মেনে নেব। এটাই স্বাভাবিক। আগেও নিয়েছি আগামীতেও নিবো।”

নিউজবাংলাদেশ.কম/একে

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়