News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:০২, ২৩ আগস্ট ২০২৫

নির্বাচনে সড়ক এড়িয়ে ৯১ স্থানে সমাবেশের আহ্বান ডিএমপির

নির্বাচনে সড়ক এড়িয়ে ৯১ স্থানে সমাবেশের আহ্বান ডিএমপির

ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনভোগান্তি এড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্যস্ত সড়ক পরিহার করে বিকল্প স্থানে সভা-সমাবেশ আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। 

তিনি বলেন, ঢাকা শহরের মতো ঘনবসতিপূর্ণ একটি নগরীতে যান চলাচল বন্ধ করে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করলে লাখ লাখ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। 

এ সময় তিনি জনসভা আয়োজনের জন্য ঢাকা জুড়ে ৯১টি বিকল্প স্থানের প্রস্তাব দেন।

শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ৩২টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ডিএমপি কমিশনার এই আহ্বান জানান। 

সভাটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো যখন ঢাকাসহ সারাদেশে নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে এবং প্রায়শই বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে যানজট ও জনভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

ডিএমপি কমিশনার তার বক্তব্যে জনভোগান্তির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। 

তিনি বলেন, রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে অনেক সময় গর্ভবতী নারী, মুমূর্ষু রোগী সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না। এমনকি একজন পরীক্ষার্থীও সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হয়। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ অত্যন্ত জরুরি।

জনদুর্ভোগ কমাতে এবং একই সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি পালনের সুযোগ নিশ্চিত করতে ডিএমপি বেশ কিছু বিকল্প স্থান প্রস্তাব করেছে। 

আরও পড়ুন: নির্বাচনমুখী জনগণকে কোনো ষড়যন্ত্র থামাতে পারবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এই ৯১টি স্থান শহরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে আছে:

  • মতিঝিল বিভাগে: ১৫টি স্থান
  • তেজগাঁও বিভাগে: ১২টি স্থান
  • লালবাগ বিভাগে: ১৭টি স্থান
  • ওয়ারী বিভাগে: ১৪টি স্থান
  • গুলশান বিভাগে: ৮টি স্থান
  • মিরপুর বিভাগে: ১১টি স্থান
  • উত্তরা বিভাগে: ১০টি স্থান
  • রমনা বিভাগে: ৪টি স্থান

এই স্থানগুলো নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশ আয়োজনের জন্য উপযুক্ত বলে ডিএমপি মনে করে।

সভায় ডিএমপি কমিশনার আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডিএমপির প্রস্তুতির কথাও তুলে ধরেন। তিনি জানান, নির্বাচনকালীন সময়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক পুলিশ ফোর্স মোতায়েন থাকবে যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন পর দেশে একটি জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে যেখানে বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত থাকবেন। তিনি একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর সম্মান ও মর্যাদা পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দেন।

সভায় উপস্থিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও তাদের বক্তব্যে ঢাকার প্রধান সমস্যাগুলো, যেমন যানজট, মাদক বিস্তার, এবং কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত নিয়ে আলোচনা করেন। তারা এসব সমস্যা সমাধানে পুলিশকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। একই সাথে তারা ঢাকাবাসীর নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে যেকোনো ধরনের নাশকতা রোধে পুলিশকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্র্যাফিক) মো. সরওয়ার বলেন, যানজট নিরসনে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে। তবে কেবল পুলিশ নয়, ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনার সাথে আরও ২৫টি সংস্থা জড়িত। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

সভায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, যেমন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এস. এন. মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, এবং অন্যান্য যুগ্ম পুলিশ কমিশনার ও উপ-পুলিশ কমিশনারগণ উপস্থিত ছিলেন।

সব পক্ষই একটি শান্তিপূর্ণ ও জনবান্ধব নির্বাচনের জন্য একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়