News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ২৯ মে ২০২৫

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ

ছবি: সংগৃহীত

আজ ২৯ মে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস’। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগ ও অসামান্য অবদান স্মরণে দিনটি পালিত হয় বিশ্বব্যাপী। এ বছরও বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালন করছে যথাযথ মর্যাদায়, আয়োজন করা হয়েছে নানা কর্মসূচির।

চার দশকেরও বেশি সময় ধরে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে বাংলাদেশ। ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাত্রা শুরুর পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের ৪৩টি দেশ ও অঞ্চলে মোট ৬৩টি মিশনে অংশগ্রহণ করেছে। বর্তমানে ১০টি দেশে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত আছেন বাংলাদেশের ৫ হাজার ৮১৮ জন শান্তিরক্ষী, যাদের মধ্যে ৪৪৪ জন নারী। সেনাবাহিনীর হিসেবে, বর্তমানে ৯টি মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের মধ্যে সেনাসদস্য রয়েছেন প্রায় ৫ হাজার।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এই দীর্ঘ পথচলায় বাংলাদেশ হারিয়েছে তার ১৬৮ জন শান্তিরক্ষীকে। শুধু সেনাবাহিনীর মধ্যেই জীবন উৎসর্গ করেছেন ১৩১ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ২৪১ জন। এ বছর দুইজন আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালেই অনুষ্ঠিত হয় ‘শান্তিরক্ষী দৌড়/র‌্যালি-২০২৫’, উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। 

এরপর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত হয় আহত শান্তিরক্ষীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম নিয়ে বিশেষ উপস্থাপনা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অংশগ্রহণ করেন তিন বাহিনী প্রধান, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, বিদেশি কূটনীতিক, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা। 

আরও পড়ুন: ৬ অঞ্চলে ২ নম্বর নৌ সংকেত

এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হচ্ছে প্রামাণ্যচিত্র ও টক শো। জাতীয় দৈনিকগুলো প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও নিবন্ধ।

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান এক বাণীতে বলেন, বাঙালি জাতি শান্তিপ্রিয় এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ বিশ্ব শান্তির অগ্রনায়ক হিসেবে পরিচিত। আমাদের সদস্যরা শুধু দায়িত্বশীলতাই নয়, প্রদর্শন করছে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা এবং মানবিক মূল্যবোধ। 

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সম্প্রতি ডিআর কঙ্গোতে তিনটি হেলিকপ্টার মোতায়েন এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ‘তোয়াদেরা কমিউনিটি ক্লিনিক’ নির্মাণ—এই সবই বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে বিশ্বদরবারে আরও উজ্জ্বল করেছে।

এছাড়া, পেরু সেনাবাহিনীর কাছে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়কারী যান হস্তান্তর এবং নারী শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণে বৃদ্ধি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা ও নেতৃত্বের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে।

বাংলাদেশের এই শান্তিরক্ষার অভিযাত্রা কেবল জাতিসংঘ ম্যান্ডেট বাস্তবায়নে অংশগ্রহণই নয়, বরং বিশ্বশান্তির প্রতীক হিসেবে দেশের ভাবমূর্তিকে তুলে ধরার এক গৌরবগাথা। আজকের এই দিনে জাতি স্মরণ করছে সেই সব বীর শান্তিরক্ষীদের, যাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে পেয়েছে সম্মানিত স্থান।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়