নিজের বিচার নিয়ে যা বললেন টিউলিপ
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিচার শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে নিজের মা, ভাই ও বোনকে অবৈধভাবে প্লট বরাদ্দ করিয়েছেন। এই মামলায় তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদক জানিয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক তার প্রভাব খাটিয়ে পূর্বাচল প্রকল্পে তার মা শেখ রেহানা, ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি) ও বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীকে প্লট পাইয়ে দিয়েছেন। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রাজউক কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এই বরাদ্দ প্রক্রিয়া সহজ করেছেন, যদিও তার নিজের নামে কোনো প্লট বরাদ্দ ছিল না। এই মামলায় মোট ১৬ জন আসামি রয়েছেন, যার মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা, ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক সামাজিক মাধ্যমে এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) এক পোস্টে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তিনি এই বিচার প্রক্রিয়াকে 'প্রহসন' আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ। তিনি আরও দাবি করেন, গত এক বছরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ বারবার পরিবর্তিত হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কখনও তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তিনি কখনও কোনো আদালতের সমন পাননি এবং সরকার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাননি। তিনি বলেন, যদি এটি একটি প্রকৃত আইনি প্রক্রিয়া হতো, তাহলে কর্তৃপক্ষ তার বা তার আইনি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করত, আনুষ্ঠানিক চিঠিপত্রের জবাব দিত এবং তাদের কাছে থাকা প্রমাণ উপস্থাপন করত। এর পরিবর্তে, তারা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক অভিযোগ ছড়িয়েছে, যা সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাছে উপস্থাপন করা হয়নি।
আরও পড়ুন: হাসিনার প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি মামলা বিচারের জন্য বদলির নির্দেশ
ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে গত ১১ ও ১৩ আগস্ট তিনটি পৃথক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
দুদকের তিন কর্মকর্তা—ডেপুটি ডিরেক্টর মো. সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া ও এসএম রাশেদুল হাসান—এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালত আগামী ২৮ আগস্ট পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে।
এদিকে, টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা এই মামলার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। তারা দাবি করেছেন, মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তাদের মক্কেলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সমন বা তথ্য প্রদান করা হয়নি।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে এই মামলার কারণে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, তিনি এই মামলাকে 'কাফকিয়ান দুঃস্বপ্ন' হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, এটি তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ। তিনি আরও দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সমন বা তথ্য প্রদান করা হয়নি এবং তিনি কখনও কোনো আদালতের সমন পাননি।
এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে, টিউলিপ সিদ্দিক জানিয়েছেন, তিনি যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে তার ভূমিকা থেকে সরে এসেছেন এবং এই মামলাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে দেখছেন।
আদালত আগামী ২৮ আগস্ট পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে। এই মামলার ফলাফল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নজরদারির মধ্যে থাকবে, বিশেষ করে টিউলিপ সিদ্দিকের রাজনৈতিক অবস্থান ও তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রেক্ষিতে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








