বার কাউন্সিল নির্বাচন: ভোট গ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
ঢাকা: বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে বেলা ৫টায়।
সুপ্রিমকোর্টের ভোটকেন্দ্রসহ সারা দেশের ৭৮টি ভোট কেন্দ্রে সনদধারী আইনজীবীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এখন চলছে গণনার পর্ব।
সকাল দশটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট সাত ঘণ্টা তারা বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। ভোট গণনা রাত কয়টার মধ্যে শেষ হবে তা কেউ নির্ধারণ করে বলতে পারছেন না। সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীরা মোট দশটি বুথে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত ভোট কেন্দ্রে আইনজীবীদের উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি বা পাসপোর্টের ফটোকপি প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতা থাকায় অনেকে ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসছেন না। এছাড়া অনেকে ব্যক্তি মামলা নিয়েও আদালতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কম ভোটার উপস্থিতির এটিও একটি কারণ।
এ নির্বাচনের অন্যতম প্রার্থী ইউনুছ আলী আকন্দ জাতীয় পরিচয় পত্রের বাধ্যবাধকতার কারণে নিজেই ভোট দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।
নির্বাচনে ১৪টি সদস্য পদে নির্বাচনের জন্য চূড়ান্তভাবে ৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৪ জন সদস্যের মধ্যে সারা দেশে সনদপ্রাপ্ত আইনজীবীদের ভোটে সাধারণ আসনে সাতজন এবং দেশের সাতটি অঞ্চলের স্থানীয় আইনজীবী সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন করে সাতজন নির্বাচিত হবেন।
জানা গেছে, সাধারণ আসনে সাতজন সদস্যের বিপরীতে ৩২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাতটি অঞ্চলের লোকাল আইনজীবী সমিতির সাতটি সদস্যপদে মোট ২৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের সংগঠন নীল প্যালেন ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের সাদা প্যানেল ছাড়াও অনেক আইনজীবী এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ভিন্ন মতাদর্শের আইনজীবী সংগঠনের ব্যানারে। তবে নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সরকার সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ এবং বিএনপি ও জামায়াত সমর্থক জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের মধ্যে।
এ নির্বাচনে সাধারণ আসনে সাতটি সদস্য পদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন- সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, আরেকজন উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ও দলের যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন (খোকন), ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট বোরহানউদ্দিন ও অ্যাডভোকেট মহসিন মিয়া।
অন্যদিকে সাধারণ আসনে সরকার সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ সমর্থিত প্রার্থীরা হলেন- সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম, বার কাউন্সিলের সাবেক নেতা সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার ও সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক আইনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, অ্যাডভোকেট পরিমলচন্দ্র গুহ (পিসিগুহ), অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম।
সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল ছাড়াও ঐক্যবদ্ধ আইনজীবী সমাজ নামে আরেকটি প্যানেল দেওয়া হয়েছে। এ প্যানেলে রয়েছেন ড. কামাল অনুসারী নেতা ও সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, শাহ মো. খসরুজ্জামান, এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, সরওয়ার ই-দীন, মো. হেলাল উদ্দিন, আবদুল মোমেন চৌধুরী ও জহিরুল ইসলাম।
তিন প্যানেলের বাইরে যারা আছেন তাদের মধ্যে সাধারণ আসনে রয়েছেন মো. ইস্রাফিল, মো. ইউনুছ আলী আকন্দ, নাসির উদ্দিন আহম্মেদ অসীম, আবুল কালাম আজাদ, আবুল হোসেন, এনামুল কবির হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন মল্লিক, মাহবুব মিয়া, শওকত হায়াত, সামছুল হক, সুলতান এ সবুর।
এর আগে গত ২০মে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও এক আবেদনের কারণে নির্বাচন পিছিয়ে ২৭মে দিন ধার্য করা হয়। এরপর আবার হাইকোর্টের এক আইনজীবী বার কাউন্সিল নির্বাচন ২০১৫-এর তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করলে শুনানি করে তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এ আদেশের স্থগিতাদেশ চেয়ে বার কাউন্সিল আপিল দায়ের করলে ভোটার তালিকা হালনাগাদের শর্তে আপিল বিভাগ প্রথমে ১৩ আগস্ট তারিখ ধার্য করে দেন। পরে অ্যাটর্নি জেনারেলের সময় আবেদনে ২৬ আগস্ট নির্বাচনের তারিখ ধার্য করে দেন আপিল বিভাগ।
নিউজবাংলাদেশ.কম/ইআ/এএইচকে
নিউজবাংলাদেশ.কম








