যুক্তরাষ্ট্রে অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য আংশিকভাবে অচল হয়ে পড়েছে। সিনেটে ব্যয় সংক্রান্ত একটি বিল পাস করতে আইনপ্রণেতারা শেষ মুহূর্তে ব্যর্থ হওয়ায় মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাত থেকে সরকার কার্যক্রম স্থগিত হয়েছে।
এই শাটডাউনের ফলে দেশব্যাপী কয়েকটি সরকারি পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাবে এবং লাখ লাখ সরকারি কর্মচারীর বেতন আটকে যাবে।
এই অচলাবস্থা মূলত বাজেট বিল পাসে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের কারণে তৈরি হয়েছে। কোনো কারণে কংগ্রেস ব্যয় বিল পাস করতে ব্যর্থ হলে বা প্রেসিডেন্ট সেই বিল স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করলে এ ধরনের ‘শাটডাউন’ ঘটতে পারে। এবারের শাটডাউনের জন্য দুই প্রধান দল একে অপরকে দায়ী করছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের এটাই প্রথম বড় শাটডাউন। গত সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে শেষ মুহূর্তের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে বৈঠকে কোনো অগ্রগতি হয়নি, বরং দুপক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকার কারণে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আশা করা হয়েছিল, মঙ্গলবারের মধ্যরাতে পর্যন্ত কোনো সমাধান বের হতে পারে, কিন্তু সিনেটে অর্থায়ন বিল পাস না হওয়ায় শাটডাউনের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতির পর গাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হবেন ট্রাম্প
ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স রিপাবলিকান নেতাদের পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, ডেমোক্র্যাটরা সঠিক কাজ করছেন না। আপনি আমেরিকানদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলতে পারেন না।
ডেমোক্র্যাটরা পাল্টা অভিযোগ করে বলেছে, রিপাবলিকানরা অপ্রয়োজনীয় খাতে বাজেট ছাঁটাই করতে চাওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে।
শাটডাউনের সময় জরুরি পরিষেবা যেমন চিকিৎসা, জাতীয় নিরাপত্তা ও বিমান চলাচল চালু থাকবে। তবে এসব ক্ষেত্রে নিয়োজিত কর্মীদের বেতন সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে।
মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, জরুরি পরিষেবা পরিচালনাকারী কর্মীরা অচলাবস্থার বাইরে থাকবে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে সর্বশেষ সরকার ৩৫ দিন বন্ধ ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম শাটডাউন হিসেবে রেকর্ড গড়েছিল। ওই সময় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা বেতন ছাড়া কাজে না আসার হুমকি দিলে বিমান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় শেষ পর্যন্ত শাটডাউন সমাধান হয়।
এবারের শাটডাউন কতদিন স্থায়ী হবে তা এখনও অনিশ্চিত। বিশ্লেষকদের মতে, এটি দীর্ঘস্থায়ী হলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, সরকারি কার্যক্রম ও সাধারণ জনগণের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে একটি বিষয় স্পষ্ট – রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় পক্ষই এই রাজনৈতিক লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত এবং কেউই সহজে পিছু হটার লক্ষণ দেখাচ্ছে না।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








