রণক্ষেত্র কক্সবাজার স্টেডিয়াম, ইউএনওসহ আহত ২০

ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারে আয়োজিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫-এর ফাইনাল ম্যাচ দর্শক তাণ্ডব ও বিশৃঙ্খলার কারণে স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল রামু ও টেকনাফ উপজেলার মধ্যে ফাইনাল খেলা।
তবে স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি টিকেট বিক্রি, পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকা এবং অতিরিক্ত দর্শকের আগ্রহের কারণে মাঠে খেলোয়াড়রা নামতে ব্যর্থ হন।
খেলার শুরু হওয়ার আগ থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্টেডিয়ামে দর্শকরা গ্যালোরি ও মাঠের সব স্থান দখল করার চেষ্টা করতে থাকেন। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ছয় গুণ বেশি টিকেট বিক্রি হওয়ায় দর্শকদের বসার স্থান না থাকার কারণে তারা গেইট ভেঙে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন। এরপর মাঠে উচ্ছ্বসিত দর্শক ও স্টেডিয়ামের বাইরে থাকা দর্শকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপের মাধ্যমে পরিবেশ সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলায় পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: বরিশালে ছাত্রদল-শিবির সংঘর্ষ, আহত ২৫
ঘটনার সময় কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিনসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে অন্তত ১৫ জনকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এদের মধ্যে পুলিশ, আনসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠি চার্জ করতে বাধ্য হয়।
দর্শকরা অভিযোগ করেন, স্টেডিয়ামের মূল টিকেটের মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে দর্শকের উপস্থিতি ও আগ্রহের কারণে টিকেটের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পায় এবং দুপুর ২টার মধ্যে টিকেটের দাম ২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকায় পৌঁছে যায়। স্টেডিয়ামের ধারণ ক্ষমতা ৫ হাজার হলেও ৩০ হাজার টিকেট বিক্রি করা হয়।
অবশেষে মাঠের খেলা পরিচালনার উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় প্রশাসন খেলা স্থগিত ঘোষণা করে। এরপরও কিছু দর্শক স্টেডিয়ামের একাংশে আগুন জ্বালাতে চেষ্টা করেন। এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।
ফাইনাল খেলার স্থগিত ঘোষণা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পরও স্টেডিয়ামের গ্যালারি, প্রেস বক্স এবং অন্যান্য ভবন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এখন পর্যন্ত আয়োজক কমিটি, জেলা প্রশাসক বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় প্রশাসন তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। কক্সবাজারবাসী এবং ক্রীড়াপ্রেমীরা ফাইনাল ম্যাচের রোমাঞ্চকর লড়াই প্রত্যাশা করলেও, অব্যবস্থাপনা ও অতিরিক্ত দর্শক উপস্থিতির কারণে এ প্রতীক্ষার পরিণতি হলো হতাশা, ক্ষোভ এবং রণক্ষেত্রের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতিতে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি