একনেক সভায় ৮৩৩৩ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন

ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪ হাজার ৪৩৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ১ হাজার ২২৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২ হাজার ৬৭০ কোটি ৯ লাখ টাকা। এটি চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের তৃতীয় ও অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪তম একনেক সভা।
আজকের বৈঠকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে—মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগার আধুনিকায়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ২০০০ হর্সপাওয়ার রিগ ক্রয়, শাহবাজপুর ও ভোলা এলাকায় কূপ খনন এবং নেসকো এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন।
এ ছাড়া অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে—বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস’ (তৃতীয় সংশোধন), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপকূলীয় এলাকায় বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়), বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের শেখ হাসিনা স্পেশালাইজড জুট টেক্সটাইল মিল ও যমুনা স্পেশালাইজড জুট অ্যান্ড টেক্সটাইল মিল প্রকল্প।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২১.৮%
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তিন প্রকল্প হলো—খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেজ-২), নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন, এবং মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী ও স্থানীয়দের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প। পাশাপাশি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (প্রথম সংশোধিত) এবং গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের মিরপুর পাইকপাড়ায় সরকারি কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পও অনুমোদিত হয়েছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সভা শেষে বলেন, এডিবি ঋণ বাস্তবায়নের ধীরগতি নিয়ে কাজ করছে সরকার। খামোখা ঋণের বোঝা বাড়াতে চায় না অন্তর্বর্তী প্রশাসন। তিনি জানান, দেশের অব্যবহৃত খাস জমি শনাক্তে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, শিল্প ও গৃহায়ন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও পরিবেশ ও পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সভায় আরও অনুমোদন পায়—ফসলের উৎপাদন ব্যয় জরিপ-২০২৫, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র স্থাপন, পার্বত্য চট্টগ্রামে মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন, সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের যন্ত্রপাতি আধুনিকীকরণ, দেশের বীমা খাত উন্নয়ন, পিরোজপুরে নতুন সার্কিট হাউস নির্মাণ, রামু সেনানিবাসে পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্ট, সিলেট সেনানিবাসে অফিসার্স বাসস্থান নির্মাণ, উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা সেতুর কাছে পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প।
সরকার মনে করে, এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিক্ষা ও গবেষণা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, নারী ক্ষমতায়ন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে গতি আসবে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি