News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২১.৮%

সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২১.৮%

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৫ দিনে দেশের প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহ ২১ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১,২৯৩ মিলিয়ন ডলার। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে তা বেড়ে ১,৫৭৪ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে প্রায় ১০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।

চলতি অর্থবছর জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৬,৪৭৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৫,৪৩১ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় ১৯ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি। জুলাই মাসে দেশে এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ডলার (প্রায় ৩০,২৩৯ কোটি টাকা), আর আগস্টে ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার (২৯,৫৪৮ কোটি টাকা) রেমিট্যান্স এসেছে।

গত অর্থবছর ২০২৪-২৫ সালে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৩০,৩২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স, যা দেশের ইতিহাসে কোনো নির্দিষ্ট অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ২৩,৯১ বিলিয়ন ডলার, যা ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ কম ছিল।

আগের বছরের মার্চ মাসে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একক মাসের সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, ১৫ সেপ্টেম্বর একদিনে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।

অন্যদিকে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার মজুত দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০,৮৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে হিসাব করলে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫,৯৮ বিলিয়ন ডলার।

গত রবিবার রিজার্ভ ছিল ৩০,৫৯ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী ২৫,৭৫ বিলিয়ন ডলার। সম্প্রতি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) পাওনা ১,৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের কারণে রিজার্ভ সাময়িকভাবে কমে ৩০,৩০ বিলিয়ন ডলারে নেমে গিয়েছিল, বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী ২৫,৩৯ বিলিয়ন ডলারে।

আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ৯ দিনে রেমিট্যান্স ১০১ কোটি ডলার

বিশ্বমানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমপরিমাণ রিজার্ভ থাকা প্রয়োজন। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ প্রায় সীমান্তরেখা অতিক্রম করে কিছুটা ভালো অবস্থায় রয়েছে। প্রবাসী আয়, রপ্তানি আয়, বৈদেশিক ঋণ ও বিনিয়োগ থেকে আসা ডলারই মূলত রিজার্ভ গড়ে তোলে। অন্যদিকে আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ, বিদেশি কর্মীদের পারিশ্রমিক, শিক্ষা ও ভ্রমণ খরচসহ নানা খাতে ডলার ব্যয় হওয়ার কারণে রিজার্ভ কমতে পারে।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংককে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হয়নি, উল্টো বাজার থেকে ডলার কিনতে পেরেছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ৪ সেপ্টেম্বর পাঁচটি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং ২ সেপ্টেম্বর আটটি ব্যাংক থেকে ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

২০১৩ সালের জুন শেষে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫,৩২ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছর পর তা বেড়ে ৩৩,৬৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায় এবং অক্টোবরেই ৪০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে।

পরবর্তীকালে কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও রিজার্ভ রেকর্ড গড়ে ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট সর্বোচ্চ ৪৮,০৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। এরপর ডলার সংকটের কারণে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে।

চলতি অর্থবছরের শুরুতে রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রিজার্ভ বৃদ্ধির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতির জন্য সুখবর হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়