টানা মূল্যবৃদ্ধির ধারায় স্বর্ণবাজারে নতুন রেকর্ড

ফাইল ছবি
বাংলাদেশের স্বর্ণবাজারে চলতি সেপ্টেম্বর মাসে টানা মূল্যবৃদ্ধির ধারায় নতুন রেকর্ড গড়েছে স্বর্ণের দাম।
আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, ডলার সংকট এবং আমদানির জটিলতা—এই তিনটি প্রধান কারণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বেড়েছে। ফলে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) একের পর এক দাম সমন্বয় করে চলেছে, যা ক্রেতাদের আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে এবং জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের ফেলেছে বিপাকে।
বাজুসের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। একদিনের ব্যবধানে ৩ হাজার ১৩৭ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৮৫,৯৪৭ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ৩,১৩৭ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান মূল্য ১,৮৫,৯৪৭ টাকা, যার পূর্ববর্তী মূল্য ১,৮২,৮১০ টাকা।
২১ ক্যারেট প্রতি ভরি ২,৯৯৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান মূল্য ১,৭৭,৫০৩ টাকা, যার পূর্ববর্তী মূল্য ১,৭৪,৫০৫ টাকা
১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি ২,৫৭৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান মূল্য ১,৫২,১৪৫ টাকা, যার পূর্ববর্তী মূল্য ১,৪৯,৫৬৭ টাকা।
সনাতন পদ্ধতিতে প্রতি ভরি ২,২০৪ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান মূল্য ১,২৬,১৪৬ টাকা, যার পূর্ববর্তী মূল্য ১,২৩,৯৪২ টাকা।
আরও পড়ুন: দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
স্বর্ণের দাম বাড়লেও রুপার বাজারে কোনো পরিবর্তন আসেনি। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২,৮১১ টাকা, ২১ ক্যারেট ২,৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেট ২,২৯৮ টাকা, এবং সনাতন পদ্ধতির রুপা ১,৭২৬ টাকা নির্ধারিত রয়েছে।
২০২৫ সালের প্রথম ৯ দিনে বাজুস স্বর্ণের দাম ৫ বার বাড়িয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৫১ বার দাম সমন্বয় হয়েছে, যার মধ্যে ৩৫ বার বেড়েছে এবং ১৬ বার কমেছে। ২০২৪ সালে মোট ৬২ বার দাম সমন্বয় হয়েছিল—৩৫ বার বেড়েছিল এবং ২৭ বার কমেছিল।
বাজুস জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত ৫% ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম ৬% মজুরি যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ক্রেতারা স্বর্ণ কেনায় আগ্রহ হারাচ্ছেন। ফলে জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে।
অনেক ব্যবসায়ী বলছেন, দাম বাড়ার ফলে বিক্রি কমে গেছে, যা তাদের আয় ও ব্যবসায়িক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলছে।
টানা মূল্যবৃদ্ধির ফলে দেশের স্বর্ণবাজারে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বাজুসের নিয়মিত সমন্বয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাবের কারণে ভবিষ্যতে আরও পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, যখন বাজার পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি