সেপ্টেম্বরে ৯ দিনে রেমিট্যান্স ১০১ কোটি ডলার
ফাইল ছবি
চলতি ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ৯ দিনে দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এক বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।
তিনি জানান, সেপ্টেম্বরের এই সময়ে দেশে এসেছে ১০১ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ হাজার ৪২০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে প্রায় ১১ কোটি ৩১ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের প্রথম ৯ দিনে দেশে এসেছিল ৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। এক বছরের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বেড়েছে ২২.৩০ শতাংশ, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।
একই সঙ্গে, ৯ সেপ্টেম্বর একদিনে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে এসেছে ৫৯১ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে (২০২৪-২৫ অর্থবছর) ছিল ৪৯৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।
অর্থবছরভিত্তিক হিসাব করলে দেখা যায়, প্রবাসী আয় বেড়েছে ৯৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা ১৯.১০ শতাংশের প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করছে।
আরও পড়ুন: টানা মূল্যবৃদ্ধির ধারায় স্বর্ণবাজারে নতুন রেকর্ড
চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে দেশে এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। তার পরের আগস্ট মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা সমান।
২০২৪-২৫ অর্থবছর দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহের ইতিহাসও নজরকাড়া। ওই অর্থবছরে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন মোট ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬.৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২৩.৯১ বিলিয়ন ডলার, যা বর্তমান প্রবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
মাসভিত্তিক হিসেবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রেমিট্যান্স প্রবাহের বিবরণ ছিল: জুলাই ১৯১.৩৭ কোটি, আগস্ট ২২২.১৩ কোটি, সেপ্টেম্বর ২৪০.৪১ কোটি, অক্টোবর ২৩৯.৫০ কোটি, নভেম্বর ২২০ কোটি, ডিসেম্বর ২৬৪ কোটি, জানুয়ারি ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারি ২৫৩ কোটি, মার্চ ৩২৯ কোটি (সর্বোচ্চ), এপ্রিল ২৭৫ কোটি, মে ২৯৭ কোটি এবং জুন ২৮২ কোটি ডলার। বিশেষভাবে, মার্চ মাসে প্রাপ্ত ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স ছিল বছরের রেকর্ড।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা, প্রবাসী আয়ের পথ সহজীকরণ এবং অনলাইনে দ্রুত ও সহজ রেমিট্যান্স সুবিধার কারণে প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। এর ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার জোগান শক্তিশালী হচ্ছে এবং অর্থনীতি আরও স্থিতিশীল হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকও জানিয়েছে, প্রবাসী আয়ের ধারাবাহিক বৃদ্ধির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা মিলছে।
বিশেষ করে স্থানীয় ব্যবসা, রপ্তানি খাত এবং বিনিয়োগকারীদের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
রেমিট্যান্সের এই প্রবৃদ্ধি শুধু দেশের অর্থনীতিকেই নয়, পরিবারের স্তরে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। প্রবাসী আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে ভোক্তা চাহিদা, নির্মাণ ও সেবা খাতও বাড়ছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








