মোহাম্মদ নাসিরুল্লাহর গুচ্ছ কবিতা
নেতা
তুমি কিছুই দেখলে না?
পাহাড়ের সমান উচা উচা সাপের দল
তাদের ফনা ফস ফস করে জ্বলে
যেমন জ্বলে অনুতাপ তোমার মনে
তুমি কিছুই শুনলে না?
তুমি জানতে পারনি এমন বিষাক্ত বিচ্ছেদ এর কারণ
এতো তোমার গতজন্মের মতমাতানো নিষিদ্ধ কর্মের ফসল?
এত্ত বড়ো বড়ও বিচ্ছু অদুরেই পায়চারী করে যেন, দেখ;
আগুনে তপ্ত ক্রুদ্ধ অগনিত উট
তোমার উত্থাপনের অপেক্ষায় ছিলো এতদিন।
ক্রদ্ধ অগ্ন্যুৎসবে তোমাকে পোড়াবে
ক্রোধের কারণ কি?
এই ক্রোধের কারণ
হয়ে উত্থাপিত হওয়া কি আনন্দের?
তোমাকে বলছি, হ্যাঁ
তোমাকেই বলছি নেতা
তোমার এই নেতিবাচক নেতৃত্ব
তোমার জন্যে
আনন্দের নয়।
দহনে দংশনে।
রচনাকাল আগস্ট ২০, ২০১৫ নিউ ইয়র্ক
মেঘে
কানাডার আকাশে মেঘেরা জলশুন্য
নিচে লালমুখী ভারবাহী
রক্তাভ রঙ্গিন গাড়ি,
দ্রুত বেগে সরে যায়,
যেমন শীতের আগমনে
লাল পিপিলিকা
দিগ্বিদিক ধায়।
রাস্তায়ও মেঘের হাইব্রিড ছায়া।
ঘন সবুজ কাল গাছের মাথা
মেঘের ছায়া মাথায় তুলে, আজও
সেজদায় নত ছায়াঘন দিন
অনেক দূর পর্যন্ত।
রুগ্ন প্রান্তর এবং ক্লান্ত দরদী সূর্যাস্ত ফনা,
সর্পিল নদীটির উপরে মেঘের মায়া রাখুক।
উর্ধ্বে উড়ুক সাদা জাহাজ আর এক মাস্তুল
পরিভ্রমণকারী সামুদ্রিক পাখি, এবং অন্যান্য ভাসমান জন্ম,
আমিও ভাসি, ভেসে যাই সাময়িকভাবে উড়ন্ত বেহুলা ভুলোমন
নিউ ইয়র্ক এর দুরন্ত সূর্যাগ্নি বিদগ্ধ তাপ সন্তাপ
দিন পেছনে।
রচনাকাল জুলাই ২১, ২০১৫ কানাডা
মিউজিয়াম
এই-ই জাদুঘর?
এতটুকুন রাজ্য।
এই রাজ্যে ঝর্না- স্রোতস্বিনী নদী,
পাখির জবানে কেউটের সুর -- নয় সুমধুর।
তোমার শহরে অট্টালিকা পর্বত সুউচ্চ ইমারত,
তার উপর ক্রন্দনশীল মেঘ রঙ্গিন,
এই শহরের নিচে কোথাও সমুদ্রে সমাহিত
জলযান আমি সামান্য অতি,
আমি নই কোন ডুবোজাহাজ ক্যারিবিয়ান।
আমি নই কোন মানুষ বৈদ্যুতিক ম্রিয়মাণ।
আমাকে নেবে না ঘরে?
তুমিও কি গৃহিণী-ই সামান্য?
শহরের রেস্তোরা আর বাগানগুলো পাখা মেলে
তোমাকে ডাকে নাই কখনও কোলে?
ডাকে নাই কোন-ই বইঘর?
বলে নাই কোন প্রেমিক স্বামী, আজকে কিন্তু হবে!
বলে নাই কেউ কখনও কেন মিউজিয়াম জাদুঘর হল বাংলায়?
এখন নিস্পন্দ মূর্তির সামনে দাড়াই। মোমের পুতুল।
আমার সুখী নিঃশ্বাস
মেঘ হয় সপ্তম আকাশে দীর্ঘ চুম্বনে,
আমার ঘড়ির কাঁটার নোক্তাগুলো
তোমার মুঠোয়।
এই মুহূর্তে আমার প্রেমের জমাদার তুমি?
এই মুহূর্তে তুমি-ই যাদুকর?
রচনাকাল মে ২০, ২০১৫ নিউ ইয়র্ক
নিউজবাংলাদেশ.কম/টিএবি
মোহাম্মদ নাসিরুল্লাহর গুচ্ছ কবিতা








