পুঁজিবাজারের পতন রোধে বিক্ষোভে বিনিয়োগকারীরা
দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন ধরে চলছে লেনদেনের মন্দাবস্থা। পতন হচ্ছে সূচকও। একইসঙ্গে কমছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর। অব্যাহত লেনদেন কমাসহ সূচক পতন প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছে বিনিয়োগকারীরা।
এসময় ইব্রাহীম খালেদের তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করাসহ জেড ক্যাটাগরি ও ওটিসি মার্কেটের বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা দাবি করেন বিনিয়োগকারীরা।
বিনিয়োগকারীরা বলেন, ডিএসই কর্তৃপক্ষ মামলার ভয় দেখিয়ে প্রায় দুই মাস পুঁজিবাজারে অব্যাহত পতন সময়েও আমাদের রাস্তায় নামতে দেয়নি। পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নসহ নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের বাকস্বাধীনতা হস্তক্ষেপ করেছিল ডিএসই। সেই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে প্রায় দুই মাস পর গত মঙ্গলবার পুঁজিবাজারের ধসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি আমরা। গত মঙ্গলবার পুঁজিবাজার উত্থান থাকলেও পরের দুই কার্যদিবস ধরে পতন চলছে। সেই এ ধারাবাহিকতায় আজও বিক্ষোভ করেছি।
বিনিয়োগকারীরা আরও বলেন, আমরা ধসের পুঁজিবাজার চাই না। আমরা চাই স্বচ্ছ বিনিয়োগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ধারা বজায় থাকুক। আমরা রাস্তায় নামতে চাই না। কিন্তু বাজারে ধারাবাহিক ধস, ডিএসই, নিয়ন্ত্রক ও সংশ্লিষ্টদের অস্বাভাবিক আচরণে নিরুপায় হয়ে রাস্তায় নামতে হচ্ছে আমাদের।
বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি একেএম মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পুঁজিবাজার উত্থানমুখী ছিল। ফলে অনেকেই নতুন করে বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে হঠাৎ করেই দরপতন শুরু হয়। ফলে বাজারে দেখা যায় উল্টো গতি। এতে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি নতুন করে আটকে যায়। সেই বৃত্ত থেকে বিনিয়োগকারীরা বের হতে পাচ্ছে না।
এ ধরনের অবস্থা থেকে পুঁজিহারা বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। তাই বাজারের গতিশীল করতে বিএসইসিকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তিনি।
এসময় আগামী মঙ্গলবার আবারও ডিএসইর সামনে বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ করবে এমন ঘোষণা দেন মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী।
এসময় বিনিয়োগকারীদের পক্ষে মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় বেশকিছু দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হলো- আইপিও অনুমোদনের আগে বিএসইসি কতৃক সাংবাদিক সম্মেলন করতে হবে; কোম্পানির অডিট ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের পূর্ন স্বাধীনতা দিতে হবে; প্রতিটি আইপিও অনুমোদনের প্রথম মাস আগে প্রত্যেকটি কোম্পানির প্রসপেক্টাস বই আকারে প্রকাশ করে প্রত্যেক ব্রোকার হাউজে পাঠাতে হবে; তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো এককভাবে ২ শতাংশ এবং সম্মিলিত ভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারন করতে হবে; পরিশোধিত মূলধন ৪০ শতাংশ বেশি আইপিওতে অনুমোদন না দেয়া; রিং সাইন কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১৩৭ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ২০০ টাকা কিন্তু ওই কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা, প্লেসমেন্টে নেওয়া হয়েছে ১৪৭ কোটি ৮২ লাখ ৬ হাজার টাকা। কোম্পানির নিজস্ব পরিশোধিত মূলধন থেকে কিভাবে এবং কিসের স্বার্থে অতিরিক্ত টাকা তোলার অনুমোদন দেয়া হলো; যে সমস্ত কোম্পানির শেয়ার ইস্যু মূল্যে নীচে অবস্থান করেছে, সে সকল কোম্পানির ইস্যু মূল্যে বাইব্যাক করতে হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএজেড/পিআর








