News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২২:০৮, ২২ আগস্ট ২০২৫

জুলাই সনদে মতামত দিয়েছে ২৩ দল

জুলাই সনদে মতামত দিয়েছে ২৩ দল

ফাইল ছবি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রণীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’-এর খসড়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত দেওয়ার নির্ধারিত সময় শুক্রবার (২২ আগস্ট) শেষ হয়েছে। 

কমিশন কর্তৃক সময়সীমা দুই দিন বাড়ানো হলেও, মোট ১৬টি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে। এর মধ্যে দেশের প্রধান দুটি দল, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী, সনদটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সুস্পষ্ট ভিন্নমত পোষণ করেছে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জুলাই সনদের খসড়া নিয়ে তাদের মতামত জমা দিয়েছে। দলটি জানিয়েছে, তারা এই সনদকে সংবিধানের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়ার পক্ষে নয়। বিএনপির মতে, যেসব সাংবিধানিক সংস্কারে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে হওয়া উচিত।

এছাড়াও, বিএনপি 'সনদ সম্পর্কিত কোনো বিষয় আদালতে প্রশ্ন করা যাবে না'—কমিশনের এমন অঙ্গীকারের সঙ্গে একমত পোষণ করেনি। দলটির এই অবস্থান সংবিধানের সার্বভৌমত্ব এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর তাদের আস্থার প্রতিফলন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সংবিধানের ওপরে এই সনদের প্রাধান্য চেয়েছে। তারা সনদকে আদালতে চ্যালেঞ্জ না করার অঙ্গীকারকেও সমর্থন করেছে। তবে জামায়াত কমিশনের কাছে একটি তালিকা চেয়েছে, যেখানে নির্বাচনের আগে বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার প্রস্তাবগুলো উল্লেখ থাকবে।

আরও পড়ুন: দলীয় প্রধান পদে থাকতে পারবেন না প্রধানমন্ত্রী

জামায়াতের এই অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, তারা দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকটের সমাধান চাইছে এবং এই সনদের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জমুক্ত রাখতে আগ্রহী।

মোট ৩০টি দল ও জোটকে এই সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছিল। বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে ১৬টি দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে। 

উল্লেখযোগ্য দলগুলো হলো লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, গণফোরাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

এদিকে, নির্ধারিত সময় বাড়ানো সত্ত্বেও ৭টি রাজনৈতিক দল এখনও কমিশনে মতামত দেয়নি। 

এই দলগুলো হলো নাগরিক ঐক্য, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় মোট ৬৮ দিনের বৈঠকে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে এই চূড়ান্ত খসড়াটি তৈরি করেছিল। এখন দলগুলোর কাছ থেকে পাওয়া মতামতের ভিত্তিতে সনদটি চূড়ান্ত করা হবে। 

কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগস্ট মাসের মধ্যেই সনদ চূড়ান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সনদ চূড়ান্তকরণ ও এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও বৈঠক করার কথা রয়েছে ঐকমত্য কমিশনের। কমিশনের মেয়াদ আছে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে সনদটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই ভিন্নমত সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত জমা দেওয়ার এই প্রক্রিয়া দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়