‘সরকারি উদ্যোগে পুলিশের জন্য ৪০ হাজার বডিক্যাম’

ফাইল ছবি
আসন্ন ফেব্রুয়ারি ২০২৬ সালের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা জোরদারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুলিশের জন্য অন্তত ৪০ হাজার বডি-ওয়্যার ক্যামেরা (বডিক্যাম) সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু করতে ‘ইলেকশন অ্যাপ’ চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
শনিবার (৯ আগস্ট) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এই উদ্যোগের ঘোষণা এসেছে।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকশ চৌধুরী এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, ৪০ হাজার বডিক্যামেরা সংগ্রহের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এসব ডিভাইস বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি সমৃদ্ধ, যা ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, আমরা অক্টোবরের মধ্যে এই ক্যামেরাগুলো সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়েছি, যাতে পুলিশ সদস্যরা এর সকল বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করার প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।
বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে জার্মানি, চীন ও থাইল্যান্ডের তিনটি কোম্পানির সঙ্গে সরবরাহ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে। নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য ও কনস্টেবলরা ভোটকেন্দ্রে তাদের বুকে এই বডিক্যামগুলো ধারণ করবেন।
আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: সিইসি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে কর্মকর্তাদের দ্রুত ক্যামেরাগুলো সংগ্রহ ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে এটি দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব নির্বাচনের প্রার্থীদের তথ্য, ভোটকেন্দ্রের আপডেট এবং অভিযোগ দাখিলের জন্য একটি ‘ইলেকশন অ্যাপ’ চালুর পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। এই অ্যাপটি ভোটারদের জন্য ইন্টার্যাকটিভ ফিচারসহ দেশের ১০ কোটির বেশি ভোটারের জন্য সহজে ব্যবহারযোগ্য হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অ্যাপটি দ্রুত চালু করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন যাতে ভোটাররা নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ ও সরাসরি তথ্য পেতে পারেন এবং যেকোনো সমস্যা দ্রুত রিপোর্ট করতে পারেন।
এই উদ্যোগে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর করার একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। বডিক্যামের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও পুলিশ সদস্যদের কর্মক্ষেত্রের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি, ‘ইলেকশন অ্যাপ’ ভোটার ও প্রশাসনের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ বাড়াবে, যা ভোট প্রক্রিয়াকে আরও নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য করবে।
গত কয়েক নির্বাচনে নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে ভোটার ও প্রশাসনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। এবার এই প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগ সেই সমস্যাগুলো মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি