News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ২৯ মে ২০২৫

নির্বাচনের প্রস্তুতিতে আন্তরিক সরকার: ড. ইউনূস

নির্বাচনের প্রস্তুতিতে আন্তরিক সরকার: ড. ইউনূস

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের জন্য আন্তরিক প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত ৩০তম নিক্কেই ফোরামে মূল বক্তৃতা এবং পরে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা এমন একটি নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছি যা ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা এবং মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত করবে। এর মাধ্যমে গণতন্ত্রে একটি শান্তিপূর্ণ, কার্যকর এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রূপান্তর সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে জনগণের ক্ষমতায়ন এবং তৃণমূল নেতৃত্ব আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি কোনো রাজনীতিক নই, আমার কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ নেই। আমার দায়িত্ব কেবল একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

ড. ইউনূস জানান, সরকার মূলত ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন করতে চায়। তবে, প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার কার্যক্রমে সময় লাগতে পারে, সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আগামী জুনের (২০২৬) মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে চলমান সংঘাতের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেন, এশিয়া এবং এর বাইরেও একের পর এক সংঘাত শুরু হচ্ছে। ইউক্রেন, গাজা, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মানবসৃষ্ট সংকটে লাখ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকা ধ্বংস হচ্ছে। শান্তি আজ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অধরা হয়ে পড়েছে। 

আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ

তিনি বলেন, যুদ্ধে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হচ্ছে, অথচ সেই অর্থের অভাবে কোটি মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে কিংবা মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধ ও সাম্প্রতিক ভূমিকম্প পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার দুটি প্রতিবেশী দেশের সীমিত যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য আমি উভয় দেশের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রত্যাশা করি।

নিজের বক্তৃতায় ড. ইউনূস এশিয়ার পারস্পরিক নির্ভরশীলতাকে দ্বন্দ্ব নয়, সহযোগিতায় রূপান্তরের আহ্বান জানান। 

তিনি বলেন, এশিয়ার অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বৈচিত্র্য আমাদের শক্তি। এই বৈচিত্র্যকে কাজে লাগিয়ে আমাদের একটি অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং সমৃদ্ধির পথ তৈরি করতে হবে।

তিনি শান্তি, অন্তর্ভুক্তি, পারস্পরিক আস্থা ও মানবিক কল্যাণভিত্তিক উন্নয়নকে আঞ্চলিক অগ্রগতির মূলভিত্তি হিসেবে চিহ্নিত করেন। 

তার মতে, ভবিষ্যৎ কেবল জিডিপি প্রবৃদ্ধি দিয়ে পরিমাপযোগ্য নয়; তা নির্ধারিত হবে নেতৃত্বের সাহস, জনগণের কল্যাণ এবং আন্তঃদেশীয় আস্থার উপর ভিত্তি করে।

ফোরামে তরুণদের উদ্দেশ্যে ড. ইউনূস বলেন, চাকরির পেছনে না ছুটে তরুণদের উচিত উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করা। নিজেদের সৃষ্টিশীলতা কাজে লাগিয়ে তারা সমাজে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন আনতে পারে।

এর আগে বুধবার (২৮ মে) স্থানীয় সময় দুপুরে জাপানে পৌঁছান ড. ইউনূস। টোকিও বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়