News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:০১, ২৭ আগস্ট ২০১৫
আপডেট: ০৪:২৬, ২৯ অক্টোবর ২০২০

প্রবীর শিকদার, ব্যাঙের ছাতা এবং আমি

প্রবীর শিকদার, ব্যাঙের ছাতা এবং আমি

আমি ঝি মেরে বৌ শিক্ষা দিবো। কালজয়ী উপন্যাস আনা কারেনিনার লেখক লিও টলস্টয়কে সাহিত্যে নোবেল দেওয়ার জন্য যখন মনোনয়ন দেওয়া হয়, তখন কতিপয় বন্ধুকে দিয়ে তিনি গোপনে নোবেল কমিটিকে চিঠি লেখালেন, যাতে পুরস্কারটি তাকে না দেওয়া হয়। নেপথ্যের কারণ, লেখক মনে করেছিলেন পুরস্কার পেলে মন লোভী হয়ে উঠবে। এতে সাহিত্যকর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রবীর শিকদার আমার চোখে শুধুই একজন প্রবীর শিকদার নন, বরং দুর্নীতির গ্রহে সদ্য আবিষ্কৃত একটি নক্ষত্র।

বন্ধুবর এখলাস উদ্দিনের মাধ্যমে জনকণ্ঠে তার সঙ্গে দেখা হলে ‘সেই রাজাকার’ বইটি পাই। এখানে আমার শহরে ফাঁসি হয়ে যাওয়া ব্যক্তি সম্পর্কে যা লিখেছেন, কৌতুহলের সঙ্গে পড়েছি। তার জ্ঞানের ভাণ্ডার দেখে সন্দেহ, বইটি নিছক কাউকে খুশি করার জন্য লেখা। অনুকম্পা পাওয়ার জন্য লেখা। নিঃসন্দেহে তিনি গবেষক নন। তাকে গ্রেফতারের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে, সরকারের কেলেংকারি নিয়ে আমি আর কি লিখবো! বরং তার ওয়েবসাইটে ঢোকার পর দুইচোখ ছানাবড়া।

কিছুক্ষণ পড়ার পর মাথায় যন্ত্রণা, হৃদপিণ্ডে লাফালাফি, নার্ভাস সিস্টেম উত্তেজিত। আমি একজন প্রবীর শিকদারের বহুমুখী চরিত্রের হালনাগাদ করতে চাইছি। ভদ্রলোক আমার চোখে একটি বিশেষ দলের রাজনৈতিক নর্দমায় যেখানে-সেখানে গজিয়ে ওঠা ব্যাঙের ছাতাদের একজন। এ ধরনের চরিত্রের মানুষদের জন্যই এ ধরনের দল প্রয়োজন। দুর্নীতির আস্তাকুড়ে এরা বেড়ে ওঠে অনন্তকাল।

ওয়েবসাইটটি দেখে মনে হওয়ার কোনোই কারণ নেই, প্রবীর শিকদারদের মতো ব্যাঙের ছাতাদের আসলেই কোনো পিতৃপরিচয় আছে। একজন মানুষকে নিজের বাবা বানাতে একটি দলের এ পর্যায়ের নৈতিক স্খলনের ক্যানভাসে একটি বিমূর্ত চিত্র- প্রবীর শিকদার।

আমরা জানি, আদম-ইভের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত পিতামাতা ছাড়া সন্তানের জন্ম হয় না। কিন্তু এসব প্রবীর শিকদারেরা আমাদেরকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করেছে, আদম-ইভ সত্য নয়। অন্যের পিতামাতাকে পিতামাতা, অন্যের ভগ্নি-ভ্রাতাকে নিজের ভগ্নি-ভ্রাতা বানাতে হবে। বানিয়ে শুধু নিজের মধ্যেই রাখা চলবে না, এসব প্রচারে চীন যেতে হবে।

নিজেকে টেনে নিতে হবে নৈতিক স্খলনের চূড়ায়। অসীম ক্ষমতাধরদের দৃষ্টি আকর্ষণে বই লিখতে হবে, পত্রিকা বানাতে হবে, ওয়েবসাইট খুলতে হবে, ঘরের দেয়ালে ভরে ফেলতে হবে কাল্পনিক বাবা-মায়ের ছবি দিয়ে। নিজের বাবা-মাকে বিসর্জন দিয়ে অন্যের বাবা-মায়ের ছবিতে জন্ম এবং মৃত্যুদিবসে ফুল দিয়ে পূজো করতে হবে। ওয়েবসাইটে ১৫ আগস্টে অনুভূতির কথা পড়ে মনে হয়েছে, লোকটির আসলেই বাবা-মা নেই। সেও কোটি কোটি স্তাবকদের মতো পিতৃপরিচয় ভুলে যাওয়ার শিক্ষা দিচ্ছে!

প্রবীরের মতো কোটি কোটি নির্বাসিত বাবা-মায়েদের জন্য আমার গভীর সমবেদনা। লিখেছেন, “১৫ আগস্টে বাবার ছবিতে একটি ফুল পায়ে ছুইয়ে প্রণাম করলাম।” না। তিনি জন্মদাতা পিতার কথা লেখেননি। সারাদিন নাকি মন খারাপ করে বারান্দায় বসেছিলেন। মানে?

প্রবীর শিকদারদের অধঃপতন আমাকে যতো বিস্মিত করে তার চাইতে বেশি উদ্বিগ্ন করে। আত্মপরিচয় বিকিয়ে দিয়ে কোন জাতি টিকতে পারে না। আত্মপরিচয়কে অস্বীকার করে কোন ব্যক্তিই আত্মবিশ্বাসী মানুষরূপে বিকশিত হয় না। যেদিন নাগরিকত্ব নিলাম, মার্কিন বিচারক সবার উদ্দেশ্যে বললেন, “আত্মপরিচয়কে কখনো তোমারা ভুলে যেও না। সব সময় মনে রেখো তোমরা কোত্থেকে এসেছো।”

এসব প্রবীর শিকদারেরা জাতিকে শেখাচ্ছেন, কীভাবে আত্মপরিচয়কে হত্যা করতে হয়। কীভাবে অন্যের আস্তাকুড়ের পোকামাকড় হতে হয়। কীভাবে বংশ পরিচয়কে কোরবানি দিতে হয়। বুদ্ধিজগতে দুর্ভিক্ষের মূর্ত প্রতীক প্রবীর শিকদারেরা। বই লিখেছেন, ‘আমার বোন শেখ হাসিনা’। বইটি লেখার মাধ্যমে তার আত্মপরিচয়হীনতার হাহাকারাই প্রকাশ পেয়েছে। ওয়েবসাইট জুড়েই অন্যের পিতার জন্য কান্নাকাটি এবং আদর্শের পিতৃপূজা কি বলছে! অনলাইন পত্রিকাজুড়ে এক ব্যক্তি, এক পরিবার, এক আদর্শের প্রচার। এদের জন্য আমার করুণা হয়।

জগৎশেঠ চরিত্রের এরা স্খলনের নিকৃষ্টতম নিদর্শন, সময়মত জাদুঘরে পাঠানো হবে। প্রবীর শিকদারেরা কারো বন-জঙ্গলের বেড়ায় জড়িয়ে পরগাছার মতো বেঁচে থাকতে চায়। অন্যের পরিচয়ে পরিচিত হতে চায়। নিজস্ব চরিত্র থাকলে, কর্মকাণ্ড দেখার পর, সেটা মনে করিনি।

পঙ্গু লোকটাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে স্খলনের আরেকটি মহাকাব্যের সূচনা হলো। কী আছে এই মহাকাব্যে! আসুন পরীক্ষা করি, নব্য বাল্মিকীমুনি। এখানে যা পাওয়া গেছে তা এইরকম। ব্রিটিশের ডিভাইড অ্যান্ড রুল নয়, নাৎসীবাহিনীর গণহত্যা নয়, পলপটের বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞ নয়, বিশেষ দলের ভূমিকা এখন তারচেয়ে বেশি। হয়তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের খলনায়কেরাও এদের হাতে নিরাপদ নয়। বিশেষ ব্যক্তির বেয়াই নাকি একজন হিন্দুকে তার বিশ কোটি টাকার সম্পত্তি জোর করে বিক্রিতে বাধ্য করেছিলো বলে অভিযোগ এই সাংবাদিকের।

কে এই বেয়াই? আনন্দবাজার পত্রিকা বেয়াইয়ের পরিচয় তুলে ধরেছে। সংখ্যালঘুদের সম্পত্তির দিকে দলগুলোর প্রসারিত হাত নিয়ে কতোটুকু আলোচনা হয়? প্রবীর শিকদারকে এজন্য ধন্যবাদ দিতেই পারি। তিনি আদর্শের সাপের ঝাঁপি খুলে দিলেন। এই দেশে পরকীয়া করতে গেলেও ব্যক্তিবিশেষে সমাজ, মিডিয়া এবং পদ-পদবীর ভয় থাকে। কিন্তু সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল করতে বিশেষ ব্যক্তির পরিচয়ই যথেষ্ট। বিশেষ ব্যক্তির নামে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিলেই ওই সম্পত্তি তার। এভাবেই তো ৬৯ বছরে প্রায় আড়াই লক্ষ একর সম্পত্তি বেদখল হয়েছে।

৪২ ভাগ সংখ্যালঘু থেকে বর্তমানে ৮ ভাগও আছে কিনা সন্দেহ। গণতন্ত্রের নামে এই ধরনের কুদৃষ্টান্ত পৃথিবীর কোথাও নেই। দলের পোস্টার হাতে রাত পোহালেই কিছু বিষাক্ত সাপ কর্মযজ্ঞে নামে। যা পায় দখল করে। এমনকি মন্দির-মসজিদ-গির্জাও রক্ষা পায় না। প্রবীর শিকদার শুধু হিন্দু সম্পত্তি দখলের কথা বলেছেন, বলেননি ৩২ নম্বরের পাবলিক রাস্তাটি বেদখল হওয়ার কথা। বলেননি, আদর্শের নামে ডোবা-নালা, মন্দির-সমজিদ দখলের কথা। তার মনমানসিকতায় একনায়কত্ববাদ। প্লুরালিজম এদের রক্তে নেই। থাকলে দেশজুড়ে ব্যক্তির নামে এই যে মাঠ-ময়দান দখল, এইসকল নৈরাজ্যও স্থান পেতো প্রবীরের পত্রিকায়। এইখানেই তাদের স্খলনের পরিচয়।

আমি ৩২ নম্বরের রাস্তা দিয়ে আর ঢুকতে পারি না। পাবলিকের জন্য লম্বা রাস্তাটির এ মাথায়-ওমাথায় বিশাল লোহার মাস্তুলের মতো বস্তু দিয়ে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করা হয়েছে। কোন সুস্থ মানুষই এর কোর ব্যাখ্যা করতে পারবে না। আমিও পারবো না। ৩২ নম্বর বন্ধ দেখে আমি যেন এই দফায় দলীয় স্খলনের নারকীয় দৃশ্যই দেখলাম। দেশজুড়ে প্রবীর শিকদারেরা বিশেষ দলের নরকে বেঁচে থাকা পরজীবী।

গ্রেফতারের আগে রাজাকার লুলা মুসার ভয়ংকর চিত্র তুলে ধরেছেন এই সাংবাদিক। প্রাণভয়ে শংকিত হয়ে জিডি করতে গেলে পুলিশ তা নেয়নি। বরং ফেসবুকে লেখার সঙ্গে সঙ্গে হিন্দুদের শত্রু আরেক হিন্দু, দলের দৃষ্টি আকর্ষণের সুরসুরিতে, পুলিশে জিডি করে বসলো। হিন্দুদের শত্রু হিন্দুরা নিয়ে আগেও লিখেছি। বিষয়টি নিয়ে মহাকাব্য লেখারও চিন্তা করছি। অতঃপর হাতকড়া পরিয়ে পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিলো। পুলিশের এহেন স্খলনের দৃশ্য বারবার দেখেছে বিশ্ববাসী।
এদিকে আনন্দবাজার থেকে আলজাজিরা... ছিঃ ছিঃ রব উঠলে আদালতে তার জামিনের বিরুদ্ধে চুপ রইল সরকার পক্ষ। যেন নিজের গালেই চড় মারলো আদালত।

এ দৃষ্টান্ত বিচার প্রার্থীদের জন্য ভয়ানক। শিকদারের জামিন হলে গলায় ফুলের মালায় বীরের বেশে ফিরতে দেখেছি। তিরস্কার না করে বরং রাজাকার এবং হিন্দু সম্পত্তি দখলদার আত্মীয়দের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি কতিপয় পরজীবী সাংবাদিক। মুক্তি পেয়েই ফেসবুক স্ট্যাটাসে ভোল পরিবর্তন। চরিত্র বলে কথা। নিজের ক্ষমতা না থাকলে যা হয়, অন্যের ওপর নির্ভরতা। এর চেয়ে দুরারোগ্য ব্যাধি পৃথিবীতে নেই। কোন ওষুধেই এ রোগ সারে না। সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে বললেন, তার বোনকে যেন কেউ ভুল না বোঝে। বোনকে ভুল বুঝলে গণতন্ত্রের ক্ষতি হবে। ভুল না বোঝে? আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, কি লুকাতে চাইছেন প্রবীর শিকদার! পরজীবী ভদ্রলোকের দ্বৈতনীতি তার স্ট্যাটাসেই পরিষ্কার।

ইঙ্গিতে যা বোঝালেন, ধনকুবের রাজাকার মুসা এবং পকেট ভর্তি মন্ত্রণালয়ের মালিক দৌর্দণ্ড প্রতাপশালী বেয়াইয়েরা একটি দেশের সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে। পলিসি মানতে বাধ্য করে। বিচারবিভাগকে নিজেদের হাতে তুলে নেয়। সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করলেও বিচারের উর্ধ্বে। অর্থাৎ রাজাকার হলে ক্ষতি নেই যখন তারা দলের। এটাই তো বলতে চেয়েছেন, প্রবীরদা, নয় কি? না, আমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতা মামলা হবে না। কারণ জুডিসপ্রুডেন্স আমার পক্ষে। এখানে রাষ্ট্র নিজেই দেখালো, প্রবীরের জন্য নিয়ম কীভাবে ভঙ্গ করা হলো।

প্রবীরের ক্ষেত্রে কেন অনিয়মই নিয়ম এবং নিয়মই অনিয়ম। ভদ্রলোক যদি ২০ দলীয় জোটের হতেন, ভাগ্যে জুটতো সাংবাদিক শওকত মাহমুদের ভাগ্য। হ্যাঁ আমি বিরোধীদল নির্যাতনের কথাই বলছি। এই দেশে বিরোধীদলের জন্য আইন বানায় সরকার আর নিজের আদর্শের হলে আইন বানায় দল। হ্যাঁ, নিয়ম ভঙ্গ করে প্রবীরের মুক্তি এবং শওকত মাহমুদকে রিমান্ড, আমার অভিযোগ প্রমাণ করেছে। শওকত মাহমুদ এবং প্রবীরকে একদিনে গ্রেফতার করা হলেও দুইজনের জন্য আইন দুইরকম হওয়ায় জুডিশিয়াল কিলিং কিংবা ক্রসফায়ারের তাণ্ডব নিয়ে লেখার জন্য মৌলিক চিন্তার মানুষ হওয়ার সাহস ওদের নেই। প্রবীর শিকদারের জামিনই প্রমাণ করলো, ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। বিষয়টি কি দাঁড়ালো?

আদালত আদালতের জায়গায় নেই। ট্রাইবুন্যালের বিচার নিয়ে বিচারকেরা একটার পর একটা মিসট্রায়ালের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেই চলেছেন। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, তিনি না থাকলে নাকি সাকার রায়ই হতো না। এটাই আইনহীনতার যথেষ্ট প্রমাণ। আরো যা দাঁড়ালো, ট্রাইবুন্যালের নামে বিরোধীদলের মেরুদণ্ড ভাঙাই লক্ষ্য। যা বললেন, বড় বড় রাজাকারেরা সরকারের আত্মীয়। বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে, রাজাকারেরাও সুরক্ষিত। বুঝলাম, সরকার রাজাকারদের বিচার চায় না, চায় বিরোধীদলকে পঙ্গু করে দিতে। মুসার ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে শেখ সেলিমের মেয়ের। রাজাকার বংশের ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে বিশেষ ব্যক্তির কন্যার। কঠিন সত্য অস্বীকারের জায়গা ফুরিয়েছে। প্রবীর শিকদারের ঘটনা যেন শাপেবর। এর মাধ্যমে বিশ্ব জানতে পারলো, প্রভাবশালী মন্ত্রী একজন রাজাকারই শুধু নয়, অসম্ভব ক্ষমতাধর ব্যক্তির বেয়াইও। আরো জানতে পারলো, ব্যক্তির আত্মীয়দের জন্য আইন কীভাবে ভঙ্গ করা হচ্ছে। জানলো, জুডিশিয়াল কিলিং কেন কল্পকাহিনী নয়, আদালত কীভাবে চলছে বিশেষ ব্যক্তির ইশারায়। অসম্ভব ক্ষমতাধর কুচরিত্র বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত করলেন প্রবীর শিকদার।

এসব ব্যাঙের ছাতার জন্যই এধরনের দল প্রয়োজন। অন্যথায় ব্যাঙের ছাতারা খাবে কী, পরবে কি! তাদের তো মুরোদ নেই। প্রবীর শিকদারের ফেসবুক খুলে বুঝতে পারলাম, কীভাবে উচ্ছিষ্টের নির্যাস খেয়ে বেঁচে থাকে পরজীবীরা। দেশজুড়েই কোটি কোটি প্রবীর শিকদারেরা এখন আর কল্পকাহিনী নয়। মানুষের ন্যূনতম বিবেক, উন্নত মানসিকতা, যুক্তির জায়গাগুলোর প্রতিটি ইঞ্চি ধরে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে একটি বিশেষ দলের হাইকমান্ড।

অন্যদিকে যাদের কোন দলীয় অনুকম্পার প্রয়োজন হয় না, এই যেমন আমি। যে দেশে থাকি, আইন প্রত্যেকের জন্য সমান। শামীম ওসমান কিংবা নাসিমরা এদেশে থাকলে বহু আগেই ইতিহাস হয়ে যেতো। জীবন জীবীকার ক্ষেত্রে প্রত্যেকের জন্য যোগ্যতা অনুযায়ী সমান সুবিধা। আজ বিপুল সংখ্যক বাংলদেশিরাও এই দেশের সুবিচারের সুবিধা ভোগ করছে। শুধু লেখার স্বার্থে আজ যে কথাটি বলতে বাধ্য হচ্ছি, আইন কিংবা অর্থের জন্য আমাদের কোন প্রবীর শিকদার হতে হয় না। ২০১৫ সনে ৫টি বড় মাপের ব্যবসা করেছি। এতে ব্যাংকের সঙ্গে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।

এজন্য আমাকে কোন বই লিখতে হয়নি কিংবা কোন মন্ত্রীর বাসায় যেতে হয়নি। পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়নি। আমি আমার নিজের ভাগ্যের জন্য নিজের দিকেই তাকিয়ে থাকি। শুধু আমি নই, আমার মতো কোটি কোটি মার্কিনিরা একইভাবে চলছে। ঈশ্বর বলে যদি কেউ থাকেন, এইসকল প্রবীর শিকদার নামক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যেন জাতিকে দ্রুত মুক্তি দেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসজে/এজে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়