ফেসবুক পোস্টের আগাম বার্তা, পরদিনই বিমান বিধ্বস্ত

ছবি: সংগৃহীত
রাজধানী ঢাকার উত্তরা এলাকার দিয়াবাড়িতে অবস্থিত মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ ও আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭১ জন।
এর মধ্যে গুরুতর দগ্ধ প্রায় ৭০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে, যখন বিমানটি আকাশ থেকে নিচে এসে সরাসরি কলেজ ভবনের গেটসংলগ্ন মূল অংশে আঘাত হানে।
বিধ্বস্ত বিমানে থাকা পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর ইজেকশন চেষ্টার পর গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বিমানটি ছিল চীনে নির্মিত চেংদু এফ-৭ বিজিআই মডেলের একটি ট্রেনিং জেট, যা বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর কুর্মিটোলা এয়ারবেস থেকে উড্ডয়ন করেছিল।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটিকেই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। ইতোমধ্যে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনার একদিন আগেই, ২০ জুলাই (রবিবার), ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি রহস্যজনক পোস্ট ভাইরাল হয়।
পোস্টে লেখা হয়, একটি স্কুল ভবন ধসে পড়তে যাচ্ছে, যার ফলে বহু শিশু প্রাণ হারাবে। আমরা এক ভয়াবহ বিপর্যয় এগিয়ে আসতে দেখছি। ভবনের অবহেলাজনিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবই এর মূল কারণ হবে। আমি একজন স্থপতি হিসেবে এই বার্তা দিচ্ছি।
পরদিন, ২১ জুলাই দুপুরে দুর্ঘটনার পর সেই একই পেজ থেকে আবার একটি পোস্ট আসে।
সেখানে বাংলাদেশের বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ভিডিও সংযুক্ত করে দাবি করা হয়, আমরা সবসময় আগেভাগেই সতর্কবার্তা পাঠাই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেগুলো গুরুত্ব পায় না। এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক।
পোস্টটিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে একের পর এক বিপর্যয় ঘটছে। তাই আমাদের বার্তাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং আগে থেকেই প্রতিকার খুঁজুন—না হলে ক্ষতির দায় আপনাকেই নিতে হবে।
‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নামের এই ফেসবুক পেজটি যুক্তরাষ্ট্র ও নাইজেরিয়া থেকে পরিচালিত বলে পেজের অ্যাবাউট সেকশনে উল্লেখ রয়েছে। তবে এদের পরিচয় গোপন রাখা হয় এবং পোস্টগুলোতে কখনোই নির্দিষ্ট সময়, স্থান বা ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ থাকে না। তাদের পূর্ববর্তী ‘সতর্কবার্তাগুলো’ নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। অনেকেই এটিকে পরে ঘটনাগুলোর সঙ্গে জোর করে মিলিয়ে দেওয়া ‘ভবিষ্যদ্বাণীমূলক মার্কেটিং’ হিসেবে দেখছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, পেজটির পোস্টে যেহেতু ‘ভবনের ধস’ এবং ‘রক্ষণাবেক্ষণ সমস্যা’র কথা বলা হয়েছিল, সেটি বাস্তবের সঙ্গে মেলেনি। কারণ মাইলস্টোন কলেজের ভবন ধসে পড়েনি; বরং একটি যুদ্ধবিমান আঘাত হেনে দুর্ঘটনা ঘটায় ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া কোনো নির্দিষ্ট স্কুল বা তার অবস্থান নিয়েও কিছু বলা হয়নি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি