News Bangladesh

স্টাফ রিপোর্টার || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ৯ আগস্ট ২০২৫

অতীতের ভুলের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইলেন জাপার চুন্নু

অতীতের ভুলের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইলেন জাপার চুন্নু

ছবি: সংগৃহীত

অতীতের ‘নৈতিক ভুল-ভ্রান্তির' জন্য দেশবাসীর কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চেয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

শনিবার রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েল কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেছেন, “গত প্রায় ৪ বছরে আমি জাতীয় পার্টির মহাসচিব হিসেবে অনেক ভুল-ভ্রান্তি আমার থাকতে পারে। সেগুলো আপনারা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

“দেশবাসীর কাছে আমি একটি কথাই বলব- আমরা রাজনীতি করতে গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে সব সময়ে হয়তো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।”

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “দলের প্রেসিডিয়ামের নেতৃত্বে ২০২৪ সাল থেকে তৃণমূলের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে- সভা, বৈঠক এবং প্রতিনিধি সম্মেলন করে জেনেছি, তাদের চাহিদা, তাদের স্বপ্নটা কী।”

তিনি বলেন, “আমাদের স্বীকার করতে হবে, সব দিন আমাদের উজ্জ্বল ছিল না। দলের ভেতরে বিভক্তি, নেতৃত্বের সংকট এবং মনোনয়ন বাণিজ্যের মতো কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে- সন্দেহ নাই। এর ফলে সাধারণ মানুষের আস্থায় কিছুটা হলেও ফাটল ধরেছে, যা মেরামত করা সময়ের দাবি।”

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের অধীনে ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল জাতীয় পার্টি। দুটি নির্বাচন ঘিরেই রয়েছে ব্যাপক বিতর্ক, ভোট কারচুপির অভিযোগ।

চুন্নু বলেন, “আমরা বিগত অনেকগুলো নির্বাচন করেছি, অনেক সময়ে অনেকে আমাদের হয়ত বিভিন্নভাবে কটূক্তি করেন। বিভিন্ন দলের সহযোগী বা স্বৈরসহযোগী হিসেবে আমাদেরকে আখ্যায়িত করেন।”

আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে কোনো বেআইনি কাজ করেননি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “একটি কথাই বলব, আমরা দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে কোনো বেআইনি কাজ করিনি। যদি নৈতিকভাবে ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকে, সেই জন্য আজকের দিনে এই কাউন্সিলে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা চাই।”

গত ৭ জুলাই সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ দলের ১০ নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

পরে অব্যাহতি পাওয়া নেতারা আদালতের দ্বারস্থ হলে ৩১ জুলাই জি এম কাদের এবং যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আদালত। জি এম কাদেরকে সরিয়ে রেখেই শনিবার দশম সম্মেলন করছেন জাতীয় পার্টির নেতারা, যেখানে দলের অন্য অংশের নেতাদেরও দেখা গেছে।

জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে চুন্নু বলেন, “আদালতের আদেশে আমাদের দলের চেয়ারম্যানের একগুঁয়েমি, দলের গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপ, স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে আদালতের সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি হয় তার ওপর।”

জাতীয় পার্টি কখনো চ্যালেঞ্জের কাছে মাথা নত করেনি দাবি করে তিনি বলেন, “সেই মুহূর্তে (নিষেধাজ্ঞার পর) প্রেসিডিয়াম- গঠনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা পিছিয়ে যাব না। এগিয়ে যাব। সেই সিদ্ধান্তের ফলে আজকের এই ঐতিহাসিক কাউন্সিল অধিবেশন।”

এ সম্মেলনকে ইতিহাসের ‘গুরুত্বপূর্ণ বাঁক’ মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নু বলেন, “আজকের এই দিনটি কেবল একটি রুটিন অনুষ্ঠান নয়৷ এটি আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক; যেখানে আমরা দাঁড়িয়ে আছি নতুন সিদ্ধান্ত, নতুন দায়িত্ব, নতুন স্বপ্নের প্রান্তে।”

জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি দলের কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, দলের কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন বাবলা, জাতীয় মহিলা পার্টির সভাপতি নাজমা আক্তার উপস্থিত আছেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়