একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৬২২, মৃত্যু ৫
ফাইল ছবি
দেশের হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এডিস মশাবাহিত রোগের সম্প্রতি ধরা পড়া নতুন আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর হিসাব উদ্বেগজনক।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিনে ৬২২ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে হাসপাতালভিত্তিক নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা বরিশাল বিভাগে ১৩১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৮ জন, ঢাকা বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে ১০৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১০০ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৯৯ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫১ জন এবং রংপুর বিভাগে ৬ জন।
গত একদিনে সারাদেশে ৫০৮ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট ছাড়পত্রপ্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭,৬৮৮ জনে।
চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত দেশে মোট ৩৯,৮১৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই সময়ে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা ১৬১ জন। মৃত্যুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি (৮১ জন) মারা গেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে ২১ জন করে, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০ জন, খুলনা বিভাগে ৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জন এবং ঢাকা বিভাগে ২ জন মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২ দফা জরুরি নির্দেশনা
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে রাজশাহী বিভাগে ৩ জন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২ জন। অন্যদিকে, বরিশাল বিভাগে নতুন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক, যা ১৩১ জন।
ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১০৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১০০ জন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৯৯ জন। চট্টগ্রাম বিভাগে নতুন ভর্তি হয়েছে ৯৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৯ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন এবং রংপুর বিভাগে ৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট ১৬১ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে সবচেয়ে বেশি (৮১ জন), চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে ২১ জন করে, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০ জন, খুলনা ৫ জন, ময়মনসিংহ ৪ জন এবং ঢাকা বিভাগে ২ জন।
এডিস মশাবাহী রোগের এই সম্প্রতি ধরা পড়া আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর হিসাব দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে যে চাপ তৈরি করছে, তা উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সতর্ক করে জানিয়েছে, বাড়ি-বাড়ি পরিচ্ছন্নতা, পানি জমে থাকা রোধ, মশারি ব্যবহার এবং নিজ নিজ স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ১,০১,২১৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন এবং ৫৭৫ জন মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে, ২০২৩ সালে মোট ৩,২১,১৭৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন এবং ১,৭০৫ জন মারা যান।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে শুধু চিকিৎসা নয়, সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা ও সামাজিক দায়িত্ব পালনও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে শহরাঞ্চল ও জনবহুল এলাকায় নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা ও জলাবদ্ধতা রোধ করাই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








