দেশের প্রথম নারী শিক্ষা সচিব রেহানা পারভীন

দেশের শিক্ষা প্রশাসনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের (মাউশি) নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রেহানা পারভীন। তিনি এই মন্ত্রণালয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে এ পদে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন। 

এর আগে, তিনি জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

সোমবার (১৮ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মাউশি বিভাগে প্রথম কোনো নারী সচিবের পদায়ন হলো।

২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দুটি আলাদা বিভাগে ভাগ করা হয়: মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ। এর আগে, ১৯৭১ সাল থেকে অবিভক্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৩৩ জন সিনিয়র সচিব বা সচিব দায়িত্ব পালন করেছেন। দুটি আলাদা বিভাগ হওয়ার পর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে এ পর্যন্ত ৭ জন সিনিয়র সচিব বা সচিব দায়িত্বে ছিলেন, যাদের কেউই নারী ছিলেন না। রেহানা পারভীনের এই নিয়োগ তাই বাংলাদেশের শিক্ষা প্রশাসনের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

এই নিয়োগের কয়েক সপ্তাহ আগে, গত ২৩ জুলাই শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব (চুক্তিভিত্তিক) সিদ্দিক জুবায়েরকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তাকে ওই দিনই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়।

আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য সুখবর: বাড়ছে বেতন-গ্রেড

এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল গত ২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা হতাহত হন। পরের দিনের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তটি সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে জানানো হয়।

এই দেরিতে পরীক্ষা বাতিলের প্রতিবাদে পরদিন শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। তারা শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জুবায়েরের পদত্যাগের দাবিতে সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়, যার ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এই ঘটনার পরই সিদ্দিক জুবায়েরকে তার পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

নতুন সচিব হিসেবে রেহানা পারভীনের নিয়োগ শিক্ষা প্রশাসনে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবে এবং চলমান সংকট নিরসনে সহায়ক হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল আশা করছে।