দাবি বাস্তবায়নে এক মাসের আল্টিমেটাম এমপিও শিক্ষকদের
ছবি: সংগৃহীত
সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয়করণ বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চাপ প্রয়োগ করছেন আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। শিক্ষকদের প্রধান দাবি একটাই—সরকারিভাবে জাতীয়করণ করা। এছাড়া শিক্ষকদের সার্বজনীন বদলি ব্যবস্থা চালু করা, বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য শ্রমিক সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা বাস্তবায়নেরও দাবি রয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় এক হাজার শিক্ষক অংশ নেন। সমাবেশে বিভিন্ন দাবির স্লোগান মুখরিত করে।
সমাবেশ শেষে শিক্ষকরা সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রার সিদ্ধান্ত নেন। তবে পুলিশি সহায়তায় ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে গিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার এবং সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসময় শিক্ষকরা দাবি পূরণের জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন।
বৈঠকে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তাদের মূল দাবিসহ বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির লিখিত প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং সমাধানের চেষ্টা চলবে।
বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে, যা শিক্ষকদের সার্বজনীন বদলি ব্যবস্থার সুপারিশ করবে। কমিটির সভাপতি করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমানকে এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে একই বিভাগের উপ-সচিব (মাধ্যমিক-২) সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলীকে। এছাড়া কমিটিতে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করতে সচিবালয়ে ১০ শিক্ষক নেতা
শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে কিছু আশ্বাস আসায় আপাতত আন্দোলন স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি পূরণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ না হলে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষক নেতাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী:
- ১৪ সেপ্টেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি।
- ১৫-১৬ সেপ্টেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি।
- ১২ অক্টোবর থেকে প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু।
এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।
বৈঠকে সরকারের নীতিনির্ধারকরা শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন এবং একাধিক বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি প্রদান করেছেন। শিক্ষকদের জাতীয়করণসহ অন্যান্য বিষয় ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের সম্ভাবনা রয়েছে।
শিক্ষক নেতারা একদিকে দাবি পূরণের জন্য স্পষ্ট সময়সীমা দিয়েছে, অন্যদিকে সরকারকে বিষয়টি বাস্তবায়নের সুযোগও দিয়েছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জাতীয়করণ এবং অন্যান্য দাবির বাস্তবায়ন আগামী কয়েক সপ্তাহে আন্দোলনের তীব্রতা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








