News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:৪৬, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হাটহাজারীতে উত্তেজনা, ১৪৪ ধারা জারি

হাটহাজারীতে উত্তেজনা, ১৪৪ ধারা জারি

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক ছবি পোস্ট এবং জশনে জুলুসের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা থেকে রবিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হাটহাজারীর ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুসে যোগ দিতে যাওয়ার পথে আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম (হাটহাজারী মাদ্রাসা) এলাকায় অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে ছবি তুলে সেটি নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন আরিয়ান ইব্রাহিম (২০)। ছবি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ফটিকছড়ি ও হাটহাজারীর কওমি মহলে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

বিকেল থেকে হাটহাজারী পৌর এলাকায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা বিক্ষোভে নামেন। তারা গোল চত্বরে টায়ার জ্বালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক অবরোধের ফলে ওই রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সংঘর্ষের সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত ৭০ জন আহত হন। 

জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ৬০ জনের বেশি আহতকে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৩ জন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়াল্টি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সবাই বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফটিকছড়ি থানার পুলিশ আরিয়ান ইব্রাহিমকে আটক করে। আটকের পর তিনি একটি ভিডিও বার্তায় দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। যদিও এ ঘটনায় উত্তেজনা কিছুটা কমলেও, পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে জশনে জুলুসে পদদলিত হয়ে দুজনের মৃত্যু, আহত ৬

আরিয়ান নিজেকে ফটিকছড়ি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। তবে ফটিকছড়ি পৌরসভা ছাত্রদলের সভাপতি একরাম উল্লাহ চৌধুরী বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। 

তিনি জানান, আরিয়ান ছাত্রদলের কেউ নয়। তিনি সংগঠনের নাম ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। ছাত্রদল প্রশাসনকে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছে।

হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ জানিয়েছেন, আরিয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এলাকাবাসীকে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন স্বাক্ষরিত আদেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। আদেশে বলা হয়েছে, মীরের হাট থেকে এগারো মাইল সাবস্টেশন পর্যন্ত এবং উপজেলা গেট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট পর্যন্ত রাস্তার উভয়পাশে এবং আশপাশের এলাকায় রাত ১০টা থেকে পরদিন বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৫ বা ততোধিক মানুষের জমায়েত, সভা-সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ, দেশি-বিদেশি অস্ত্র বহন ও যেকোনো ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।

হাটহাজারী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষও মাইকে ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল জোরদার করেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়