News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৮:৩৯, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নেপালে সহিংস বিক্ষোভ: সেনা হেলিকপ্টারে সরানো হচ্ছে মন্ত্রীদের

নেপালে সহিংস বিক্ষোভ: সেনা হেলিকপ্টারে সরানো হচ্ছে মন্ত্রীদের

ছবি: সংগৃহীত

নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুরু হওয়া গণআন্দোলন ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। রাজধানী কাঠমান্ডু ও আশপাশের এলাকায় বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা। 

মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর) আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। 

দেশজুড়ে সেনা মোতায়েন, কারফিউ, বিমান চলাচল বন্ধসহ একাধিক জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর নেপাল সরকার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ ঘোষণা করে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ৮ সেপ্টেম্বর শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হলেও তা দ্রুত সহিংসতায় রূপ নেয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করে, আন্দোলনকারীরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

এই আন্দোলনকে ‘জেন-জি রেভল্যুশন’ নামে অভিহিত করা হয়েছে, যেখানে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে দুর্নীতি ও দমননীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সাধারণ জনগণ।

বিক্ষোভকারীরা একাধিক মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায়। বিশেষ করে ভাইজেপাতি এলাকায় মন্ত্রীদের বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মন্ত্রীদের সরিয়ে নিচ্ছে নিরাপদ স্থানে। সংসদ ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সামরিক ব্যারাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে, ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেন। আন্দোলন চলাকালীন অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। স্থানীয় নেতারা ও সেনাপ্রধানের চাপের মুখে পদত্যাগ করেন ওলি। 

গুঞ্জন রয়েছে, তিনি দুবাই অথবা ভারতে আশ্রয় নিতে পারেন, যদিও ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্ক বর্তমানে উত্তপ্ত এবং চীনও তাকে আশ্রয় দিতে অনিচ্ছুক।

ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আন্দোলনকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পুরো এলাকা ঘিরে রাখে যাতে কোনো মন্ত্রী বা কর্মকর্তা পালাতে না পারেন। ফলে দেশটির বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সদস্যসহ ডিএসসিএসসি’র ৫১ সদস্যের প্রতিনিধি দল কাঠমান্ডুতে আটকে পড়েছেন।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ নয়, বরং সরকারের দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও জবাবদিহিহীনতার বিরুদ্ধে তারা রাস্তায় নেমেছেন। ২৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থী ইউজান রাজভাণ্ডারি বলেন, “সোশাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা করা হয়েছে বলেই আমাদের এই আন্দোলনের সৃষ্টি। 

আরেক শিক্ষার্থী ইক্ষামা তুমরোক বলেন, আমরা সরকারের এইরূপ আচরণ কিছুতেই সমর্থন করছি না। আমরা ভালোর জন্য পরিবর্তন চাই।

নেপালের এই পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতার নতুন অধ্যায় রচনা করেছে। শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের পূর্ববর্তী গণআন্দোলনের পুনরাবৃত্তি যেন এবার নেপালে ঘটছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে বাংলাদেশ সরকার এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়